কলেজে ভর্তিতে ‘হেল্প লাইন’

সেই নিষেধ উড়িয়েই কেশপুর কলেজে খোদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর নেতারা ‘হেল্প লাইন’ নম্বর চালু করেছে বলে অভিযোগ উঠল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেশপুর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০০:১০
Share:

কলেজের পাশেই সাইবার কাফে।নিজস্ব চিত্র

শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, এ বছর কলেজে ভর্তি হবে পুরোপুরি অনলাইনে। কোথাও ছাত্র সংগঠনের তরফে ‘হেল্প ডেস্ক’ করা যাবে না।

Advertisement

সেই নিষেধ উড়িয়েই কেশপুর কলেজে খোদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর নেতারা ‘হেল্প লাইন’ নম্বর চালু করেছে বলে অভিযোগ উঠল। কলেজের টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক শেখ সানাউল্লা নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্পষ্টই লিখেছেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে যে সব ছাত্রছাত্রীরা কেশপুর কলেজে ভর্তি হতে ইচ্ছুক, অতি সত্বর কলেজ গেটে এসে (সাইবার কাফে) বলে যে ক্যাম্প রয়েছে ওখান থেকে ফর্ম সংগ্রহ করুন।’ পোস্টের নীচে যোগাযোগের জন্য হেল্পলাইন হিসেবে নিজের মোবাইল নম্বরও দিয়েছেন সানাউল্লা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, কেশপুরের সুকুমার সেনগুপ্ত মহাবিদ্যালয়ের মূল গেটের পাশেই রয়েছে একটি সাইবার কাফে। সেখানেই টিএমসিপি-র ছেলে ল্যাপটপ নিয়ে বসে ফর্ম পূরণ করে দিচ্ছে। সাইবার ক্যাফের সামনে ব্যানারেও বড় হরফে লেখা— ‘কেশপুর কলেজে ভর্তি চলিতেছে’।

Advertisement

কলেজে ভর্তির সময় প্রতিবারই ‘হেল্প ডেস্কে’র নামে পড়ুয়াদের থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ ওঠে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি দেখে এ বছর কলেজে ভর্তির যাবতীয় প্রক্রিয়া অনলাইনে সারার ব্যবস্থা করেছে শিক্ষা দফতর। ভর্তির টাকাও জমা করতে হবে অনলাইনেই। মেধা তালিকার ভিত্তিতেই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এই নিয়মে ক্লাস শুরুর দিনই প্রথম কলেজে পা রাখবেন প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা। নথিপত্র যাচাই হবে ক্লাস শুরুর পরে। তখন যদি দেখা যায়, কেউ ভুল নথি দিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছেন, তাঁর ভর্তি বাতিল হবে।

নিয়মের ফাঁক গলেই সাইবার কাফের নামে টিএমসিপি হেল্প ডেস্ক চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানাজানি হতেই জেলায় শোরগোল পড়েছে। সরব হয়েছে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি। এবিভিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি স্বরূপ মাইতির অভিযোগ, ‘‘হেল্প লাইনের নামে দুর্নীতি করারই চেষ্টা চলছে।’’ এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদির কথায়, ‘‘ঘুরপথে তোলাবাজির পথ খুঁজেছে টিএমসিপির ছেলেরা।’’

গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন। টিএমসিপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘হেল্প লাইন চালুর কথা নয়। কেশপুরে অনিয়ম হয়ে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। আমরা ছাত্রছাত্রীদেরও প্রলোভনে পা না দেওয়ার কথা বলছি।’’ নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন কেশপুর কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়াও।

তবে যিনি ফেসবুকে হেল্পলাইন নম্বর পোস্ট করেছেন, কেশপুর কলেজের সেই টিএমসিপি নেতা সানাউল্লার দাবি, ‘‘হেল্প ডেস্ক, হেল্প লাইন কিছুই চালু হয়নি!’’ তাহলে আপনার ওয়ালে ওই পোস্ট কেন? এ বার ছাত্র নেতার জবাব, ‘‘ফেসবুকে তো কত কিছুই লেখা হয়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন