বিশাল জয়সবাল। নিজস্ব চিত্র
ঘাটের কাছে লাগানো রয়েছে সতর্কবার্তা। জোয়ারের সময় ওই ঘাট এলাকায় স্নান করা নিষিদ্ধ বলে মাইকে প্রচারের করা হয়। কিন্তু সেই সতর্কতা না মেনে সেখানের সমুদ্রে স্নান করতে নেমে বৃহস্পতিবার মৃত্যু হল এক পর্যটকের।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বিশাল জয়সবাল (১৯)। তাঁর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরে। ব্যারাকপুরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের বাণিজ্যের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল বিশাল। বাবা-মা এবং আত্মীয়দের সঙ্গে বৃহস্পতিবারই দিঘায় বেড়াতে এসেছিলেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সকাল আটটা নাগাদ ওল্ড দিঘায় পৌঁছে দিশারী পার্কিংয়ের কাছে গাড়ি রেখে জায়সবাল পরিবার বিশ্ব বাংলা উদ্যানের কাছে গিয়ে বসে। সেই সময় বিশাল, তাঁর ১৫ বছরের ভাই বিবেক এবং ১৪ বছরের তুতোভাই শঙ্কর ওল্ড দিঘার সমুদ্রে স্নান করতে নেমে যান। আর হঠাৎ একটি বড় ঢেউ এলে তাঁরা তিনজনই তলিয়ে যান।
উল্লেখ্য, ওল্ড দিঘার বিশ্ব বাংলা উদ্যানের কাছে সমুদ্রে স্নান করা বিপজ্জনক। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের পক্ষ থেকে তাই সেখানে ‘বিপজ্জনক ঘাট’ এর সাইনবোর্ডও লাগানো হয়েছে। আর জোয়ারের সময় ওই এলাকায় স্নান করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
বিসালদের তলিয়ে যেতে দেখে নুলিয়ারা সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিবেক এবং শঙ্করকে উদ্ধার করে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু বিশালকে তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করা যায়নি। ঘটনাস্থলে যান দিঘার সার্কেল ইন্সপেক্টর চম্পক রায়চৌধুরী। তাঁর তত্ত্বাবধানে নুলিয়া, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও কোস্টাল থানার পুলিশ তল্লাশি অভিযান শুরু করে। বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ ওল্ড দিঘার সিহকগোলা ঘাটে বিশালের দেহ উদ্ধার করেন নুলিয়ারা। তাঁকে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ মৃতদেহ ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে।
ঘটনায় ভেঙে পড়েছে জায়সবাল পরিবার। বিশালের বাবা মহেন্দ্র জায়সবাল মিষ্টি ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, “ছেলেরা কখন স্নান করতে নেমে গিয়েছে বুঝতে পারিনি। হঠাৎ বড় ঢেউ এসে পড়ায় ওই ঘটনা ঘটেছে।’’ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত পর্যটকদের মাইকে ঘোষণা ও নুলিয়াদের মাধ্যমে সতর্ক করছি। কিন্তু পর্যটক যদি সচেতন না হন, তাহলে দুর্ঘটনা এড়ানো খুবই কষ্টকর। আমরা পর্যটকদের সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’’