Indian Railways

indian Railways: ট্রেন থামানোর দাবিতে অবরোধ

চলতি বছরের ৫ মে স্টিল এক্সপ্রেসের সময়ে চলা বিশেষ ট্রেনটিই অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এতে সমস্যায় পড়েন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২০
Share:

ঝাড়গ্রাম স্টেশনে ট্রেনের চালককে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন ‘আমরা ঝাড়গ্রামবাসী’র এক সদস্য। নিজস্ব চিত্র।

একই সঙ্গে অভিনন্দনের ফুল আর অবরোধের কাঁটা!

Advertisement

মঙ্গলবার থেকে চালু হল টাটা-হাওড়া বিশেষ সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেন (সাবেক স্টিল এক্সপ্রেস)। হাওড়াগামী ট্রেনটি এদিন সকালে ঝাড়গ্রামে থামলে চালক ও গার্ডকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানালেন ‘আমরা ঝাড়গ্রামবাসী’র প্রতিনিধিরা। কিন্তু ঝাড়গ্রাম ছেড়ে সরডিহা পৌঁছতেই অবরোধে থমকে গেল ট্রেন। সরডিহা ও মানিকপাড়ার বাসিন্দারা সরডিহা স্টেশনে মিনিট সাতেকের জন্য থামিয়ে দিলেন ওই সুপার ফাস্ট ট্রেনটি। তাঁদের দাবি, সরডিহায় আগের মতো ওই ট্রেনের স্টপ ফেরাতে হবে।

রেলের সূচি অনুযায়ী হাওড়াগামী ট্রেনটি এ দিন সকাল ৬টা ১০ মিনিটে টাটা স্টেশন থেকে ছেড়ে রাখামাইনস, ঘাটশিলা ও চাকুলিয়ায় স্টপ দিয়ে ঝাড়গ্রাম স্টেশনে থামে সকাল ৭টা ৪০ মিনিট নাগাদ। ট্রেন থামতেই ‘আমরা ঝাড়গ্রামবাসী’ আহ্বায়ক পেশায় শিক্ষক তমাল চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ওই গণমঞ্চের লোকজন ট্রেনের চালক ও গার্ডের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন। পরে স্টেশন ম্যানেজার হীরালাল মুর্মুর হাতেও ফুলের তোড়া তুলে দেওয়া হয়। তমাল বলেন, ‘‘৫ মে থেকে ট্রেনটি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় খুবই সমস্যায় পড়েছিলেন এলাকাবাসী। কারণ স্টিল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঝাড়গ্রামের ‘লাইফ লাইন’।’’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, রেল সংক্রান্ত নানা দাবিতে তাঁরা বিভিন্ন স্তরে আবেদন নিবেদন চালিয়ে যাবেন। স্টিলের স্টপ চালু হওয়ায় এদিন থেকে স্টেশন চত্বরে ‘আমরা ঝাড়গ্রামবাসী’র লাগাতার রিলে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। গত ২০ অগস্ট ওই কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন মিলে ‘আমরা ঝাড়গ্রামবাসী’ নামে গণমঞ্চটি গড়েছেন।

Advertisement

এদিন সকাল ৭টা ৫৩ নাগাদ সরডিহা স্টেশনে রেললাইন অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে সুপার ফাস্ট ট্রেনটি আটকে যায়। রেল পুলিশের উপস্থিতিতে সরডিহার স্টেশন ম্যানেজার আশ্বাস দেন, স্টপের দাবির বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। এরপরে সকাল ৮টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। ট্রেনটিও গন্তব্যে রওনা দেয়।

একটু এগোতেই সরডিহা স্টেশনে অবরোধে আটকে গেল সেই ট্রেন। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।

২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে টাটা-হাওড়া স্টিল সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস সরডিহা স্টেশনে নিয়মিত স্টপ দেওয়া শুরু করে। গত বছর লকডাউনে বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। গত বছর ১৬ অক্টোবর থেকে স্টিলের সময়ে বিশেষ ট্রেন হিসেবে আপ ও ডাউন ট্রেনটি চালানো শুরু হয়। যথারীতি দু’বেলাই সরডিহায় থামত ট্রেনটি। কিন্তু গত বছর ৬ ডিসেম্বর থেকে আচমকা সরডিহা থেকে স্টিলের স্টপ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আর চলতি বছরের ৫ মে স্টিল এক্সপ্রেসের সময়ে চলা বিশেষ ট্রেনটিই অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এতে সমস্যায় পড়েন অনেকে।

কারণ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের টাটা-খড়্গপুর শাখার সরডিহা স্টেশনটি ঝাড়গ্রাম জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। বহু যাত্রী এই স্টেশনের উপরে নির্ভরশীল। স্টেশনটি রয়েছে ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়া এলাকায়। এদিনের অবরোধে মানিকপাড়া ও সরডিহার বাসিন্দারাই মূলত ছিলেন। মানিকপাড়া এলাকাটি জনবহুল ও জেলার অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্রও বটে। সরডিহা স্টেশনে স্টিল ছাড়া অন্য কোনও এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপও ছিল না। টাটা-খড়্গপুর শাখায় লোকাল ট্রেন চলাচল এখনও শুরু হয়নি। ফলে মানিকপাড়া ও সরডিহা এলাকার বহু মানুষের হাওড়া ও টাটায় যাওয়ার জন্য যাওয়ার একমাত্র ভরসা ছিল স্টিল এক্সপ্রেস। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নীরজ কুমার বলেন, ‘‘সরডিহায় স্টপের দাবি উঠলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন