বিচারাধীন বন্দির উপরে মানসিক অত্যাচার চালানোর অভিযোগ ওঠায় এক ওয়ার্ডারকে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে ঝাড়গ্রাম সংশোধনাগারে বদলি করে দিল কারা দফতর।
মঙ্গলবার ওই বদলির নির্দেশ জারি হয়। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার স্বরূপ মণ্ডল বলেন, “দফতরের ওই নির্দেশ এসেছে।”
সবংয়ের ছাত্র খুনের ঘটনায় ধৃত টিএমসিপি কর্মী শেখ মুন্নার উপরে জেলের মধ্যেই মানসিক অত্যাচার চলছে বলে অভিযোগ ওঠে। গত শনিবার জেল সুপার স্বরূপ মণ্ডলের কাছে লিখিত ভাবে এই অভিযোগ করেন মুন্নার বাবা শেখ মনসুর আলি। মনসুর আলির বক্তব্য ছিল, ছেলে প্রায় ৮ মাস ধরে জেলে রয়েছে। প্রথম ৬ মাস সব ঠিকঠাকই ছিল। পরে ছেলের উপরে মানসিক অত্যাচার শুরু হয়। গত ২ মাস ধরে এক কারারক্ষী তার কাছে টাকা চাইছে। টাকা চেয়ে চাপ দিচ্ছে। টাকা না দিলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। এমনকী মারধরও করছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন জেল কর্তৃপক্ষ। মনসুর আলির দাবি, গত সোমবার তিনি ছেলের সঙ্গে দেখা করেন। তখন ছেলে হাত ধরে কাঁদতে থাকে। সমস্ত ঘটনার কথা জানায়। ওই কারারক্ষীর নাম প্রসেনজিৎ মণ্ডল। মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ওই অভিযোগপত্র পাঠিয়ে দেন দফতরের শীর্ষ কর্তাদের কাছে।
এরপর তদন্ত শুরু হয়। জেলেরই এক সূত্রের অবশ্য দাবি, প্রসেনজিৎ মণ্ডলকে ‘মিথ্যা অভিযোগে’ ফাঁসানো হয়েছে। ওই কারারক্ষী জেলের মধ্যে থেকে এর আগে মোবাইল উদ্ধার করেছেন। মোবাইলের কারবার করে, এমন এক বন্দির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারশিও করেছিলেন। এটা কেউ কেউ ভাল ভাবে নেননি! বস্তুত, সোমবারই জেলে গিয়ে মুন্নার সঙ্গে দেখা করেন জেলা তৃণমূলের অন্যতম কার্যকরী সভাপতি তথা সবংয়ের প্রার্থী নির্মল ঘোষ। যে সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয় কংগ্রেস।
কংগ্রেস- শিবিরের প্রশ্ন, মানস ভুঁইয়া দেখা করার পরে অনুপম আদককে অন্য জেলে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ, মেদিনীপুর জেলে গিয়ে মাঝেমধ্যেই টিএমসিপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন তৃণমূল নেতারা। নির্মলবাবুর অবশ্য দাবি, তিনি অন্যায় কিছু করেননি। নিয়ম মেনেই মুন্নাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। এ নিয়ে বিতর্কেরও কিছু থাকতে পারে না। শুধু বদলিই নয়, ওই ওয়ার্ডারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জেলের এক সূত্রে খবর।