রক্তদান:—নিজস্ব চিত্র
এ যেন গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজো।
রক্তদান আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁরই বাড়িতে আয়োজন করা হয়েছিল রক্তদান শিবিরের। যেখানে রক্তদান করলেন ৪২জন।
তবে এই প্রথম নয়, গত ১৩ বছর ধরেই চন্দ্রকোনার কাশকুলি গ্রামের করণ বাড়িতে প্রতি বছর ২৯ মে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। কারণ ওই দিন মারা গিয়েছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের তরতাজা যুবক বিবেকানন্দ করণ। পারিবারিক ব্যবসা ছিল। কিন্তু সেই ব্যবসাকে ছাপিয়ে তাঁর একটাই পরিচয় তৈরি হয়েছিল, ‘রক্তদান আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী’। এলাকার কোনও রোগীর রক্তের দরকার হলে ভরসা ছিলেন তিনিই। স্থানীয় বাসিন্দা মুকুল ভুঁইয়া, নেপাল হাতি বলেন, “বিবেকানন্দ ছোট থেকেই মানুষের উপকারে এগিয়ে যেতেন। রক্তদান সম্পর্কে সকলকে উৎসাহ দিতেন। কোথাও রক্তদান শিবির হলে ওকে আটকায় কার সাধ্যি। কারও রক্তের দরকার হলে ওঁর কাছেই ছুটত সবাই।’’
বিবেকানন্দবাবুর ভাই বিদ্যাসাগর বলেন, “কোনও আত্মীয় বা পরিচিতের রক্তের প্রয়োজন হলেই ব্যবসা ফেলে দাদা ছুটে বেড়াতেন। ২০০৫ সালের ২৯ মে এক দুর্ঘটনায় দাদা মারা যান। রক্তদান নিয়ে সচেতনতায় দাদার লড়াইকে সম্মান জানাতেই প্রতি বছর আমরা এই দিনে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করি।’’
এদিন গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, করণ পরিবারে পড়শি এবং আত্মীয়দের ভিড়। সকলেই এসেছে রক্ত দিতে। বাবার ছবিতে মালা দিয়ে শিবিরের উদ্বোধন করেন বিবেকানন্দ করণের একমাত্র মেয়ে সোমদত্তা। দশম শ্রেণির ছাত্রী সোমদত্তার কথায়, “বাবা মানুষের উপকারের জন্য কাজ করেছেন। আমিও তাঁর পথেই এগিয়ে যাব।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “করণ পরিবারের এই উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। বেনজিরও বটে।”