হোটেলে পর্যটকের অস্বাভাবিক মৃত্যু

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ঈশান আকবর (২৮)  হুগলির বাঁশবেড়িয়ার শঙ্খনগর সিটির  ইসলাম পাড়ার বাসিন্দা। এক যুবতীর সঙ্গে গত  ২৬  ফেব্রুয়ারি দিঘায় এসেছিলেন তিনি। নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে উঠেছিলেন ওল্ড দিঘার ওই হোটেলে। যদিও জেরার মুখে ওই যুবতী তাঁদের বিয়ের স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেননি বলে পুলিশের দাবি।   

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯ ০২:৪১
Share:

—প্রতীকী ছবি।

গত দু’সপ্তাহে দুই পর্যটকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল দিঘার হোটেলে। মৃত্যুর রেশ জারি রইল শুক্রবারও। এ দিনও ওল্ড দিঘার একটি হোটেলে এক পর্যটকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ঈশান আকবর (২৮) হুগলির বাঁশবেড়িয়ার শঙ্খনগর সিটির ইসলাম পাড়ার বাসিন্দা। এক যুবতীর সঙ্গে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দিঘায় এসেছিলেন তিনি। নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে উঠেছিলেন ওল্ড দিঘার ওই হোটেলে। যদিও জেরার মুখে ওই যুবতী তাঁদের বিয়ের স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেননি বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে হুগলির ওই পর্যটক হোটেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর সঙ্গে থাকা ওই যুবতী বিষয়টি হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানান। হোটেলের কর্মীরা ঈশানকে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক ঈশানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে ঈশানের সঙ্গে থাকা ওই যুবতীর নাম হোটেলের রেজিস্টার খাতায় জামেলা খাতুন রয়েছে। ওই যুবতী পুলিশকে জানান, রাতে ঈশান বিরিয়ানি খেয়েছিলেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু তাঁরা যে স্বামী-স্ত্রী, সে বিষয়ে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেননি ওই যুবতী।

Advertisement

দিঘা মোহনা থানার পক্ষ থেকে ঈশানের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। তাঁর বাড়ি থেকেও বিয়ের ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু জানানো হয়নি বলে পুলিশের দাবি। তাঁরা দিঘা মোহনা থানার পুলিশকে জানিয়েছেন, ঈশান কর্মসূত্রে কেরলে থাকতেন। সেখানে তিনি কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করেছিলেন কি না, সে নিয়ে তাঁর পরিবারের কোনও ধারণা নেই। আপাতত ওই অস্বাভাবিক মৃত্যু সম্পর্কে পুলিশ ওই যুবতীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। মৃত পর্যটকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, ওই ঘটনায় তদন্ত করতে হোটেলে গিয়ে পুলিশ আরও কয়েকজন যুবক-যুবতীকে আটক করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই হোটেলে যে রুমে ঈশানরা ছিলেন, তার ঠিক পাশের রুমেই তিন যুবক এবং এক যুবতী ছিলেন। হোটেলে পুলিশকে দেখে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এর পরেই পুলিশ তাঁদের আটক করে। পুলিশ জানিয়েছে, চারজন জেরায় জানিয়েছে, তাঁরা সকলেই ডান্স গ্রুপের সদস্য। কিন্তু একটি ডবল বেডের ওই রুমে চারজনের থাকা নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশের দাবি, হোটেলের নিয়ম অনুযায়ী এটা ঠিক নয়। আপাতত ওই হোটেলের মালিককেও পুলিশ এ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করে।

কিন্তু লাগাতার দিঘার হোটেলে পর্যটকদের মৃত্যু হওয়ায় একাধিক প্রশ্ন সামনে আসছে। তার মধ্যে অন্যতম হল, হোটেল কর্তৃপক্ষ কি পর্যটকদের সঠিক তথ্য যাচাই না করেই ঘর ভাড়া দিচ্ছে?

দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওল্ড দিঘার সেই হোটেলে ডবল বেডের রুমে ডান্স ট্রাপের এক যুবতী সহ চারজনকে রাখা ঠিক হয়নি। কোনও হোটেল এই ধরনের বেনিয়ম করলে আমরা তা বরদাস্ত করব না। পাশাপাশি এটাও ঠিক, অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে যাঁরা হোটেলে আসেন, তাঁরা আদৌ স্বামী স্ত্রী কি না, তা বোঝা হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে দুষ্কর হয়ে পড়ে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন