সরস্বতী ও ধ্রুবজ্যোতি। —নিজস্ব চিত্র।
মেঝেতে পড়ে তিন বছরের ছেলে। ঘরে সিলিং থেকে ঝুলছেন মা।
শুক্রবার সকালে বছর বারোর তনিমা দের চিৎকার শুনে পৌঁছে এমনই দৃশ্য দেখেছিলেন নারায়ণগড়ের কুশবসান গ্রাম পঞ্চায়েতের মাসুমচক গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। ভোরেই টিউশনে বেরিয়ে গিয়েছিল তনিমা। বাড়ি ফিরে সে দেখে, মেঝেতে অসাড় অবস্থায় পড়ে রয়েছে ভাই ধ্রুবজ্যোতি দে। মাকে ডেকে সাড়া না পেয়ে পেয়ে পড়শিদের ডাকে তনিমা। পড়শিরা দেখেন, ধ্রুবজ্যোতির মুখ দিয়ে রক্ত বার হচ্ছে। পাশের ঘরে সিলিং থেকে ঝুলছেন তনিমা, ধ্রুবজ্যোতির মা সরস্বতী দে (৩৩)। প্রতিবেশীরাই দড়ি কেটে নামান তাঁকে। পুলিশ পৌঁছে হাসপাতালে পাঠায়।
সরস্বতীর স্বামী তরুণ চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত। এ দিন সকালে ওষুধ আনতে মেদিনীপুরে গিয়েছিলেন তিনি। তরুণ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন সরস্বতী। তৈরি হয়েছিল মানসিক সমস্যাও। চারজনের সংসার। অনেক খেটে সদ্য একটি পাকা ঘর করেছেন তরুণ। গ্রামবাসীর দাবি, এর আগেও বেশ কয়েকবার বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সরস্বতী। তবে অধিকাংশেরই বক্তব্য মহিলার মানসিক সমস্যা ছিল। তবে পুত্র সন্তানকে মেরে ফেলার ঘটনায় সকলেই স্তম্ভিত। পাশেই থাকেন তরুণের দাদা তপন দে। তিনি বলেন, ‘‘কেন এই ঘটনা ঘটালো বোঝা যাচ্ছে না।’’ মহিলার বাপের বাড়ি নারায়ণগড়ের মেট্যাল থেকে ছুটে আসেন মা, ভাই-সহ আত্মীয় পরিজন। মহিলার মা কাজল দাসের মন্তব্য,‘‘মেয়ে একটু অন্যরকম ছিল। নানা কাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে এই কাণ্ড ঘটাবে আশা করিনি।’’ প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, প্রথমে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর আত্মঘাতী হয়েছেন ওই মহিলা। অন্য কারণ আছে কি না, তা দেখছে পুলিশ।