রবীন্দ্রস্মৃতি বিজড়িত বিদ্যাসাগর হল সাজাবে পর্ষদ

পরিস্থিতি পাল্টাতে উদ্যোগী হয়েছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ)। এমকেডিএ-র বরাদ্দ অর্থে নতুন করে সেজে উঠবে এই হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০১:০৪
Share:

অপেক্ষায়: ঐতিহ্যের এই ভবনই পাবে নতুন রূপ। নিজস্ব চিত্র

কোথাও দেওয়ালে ফাটল, কোথাও ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দির (বিদ্যাসাগর হল) এখন এমনই বেহাল।

Advertisement

পরিস্থিতি পাল্টাতে উদ্যোগী হয়েছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ)। এমকেডিএ-র বরাদ্দ অর্থে নতুন করে সেজে উঠবে এই হল। ইতিমধ্যে পরিকল্পনা হয়েছে। এমকেডিএ-র চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলছিলেন, “মেদিনীপুরের এই হল আমাদের কাছে গর্বের। এই ইতিহাসকে ধরে রাখতেই হবে।”

মেদিনীপুরে এসে এই হলের দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেটা ১৯৩৯ সাল। এখানে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের ঘরও রয়েছে। সেই ঘরে ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিদ্যাসাগর হলের দ্বারোদ্ঘাটনের সভায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত চেয়ার ও টেবিল রয়েছে। এমকেডিএ সূত্রে খবর, এমন ঐতিহাসিক হলের পরিকাঠামো উন্নয়নে সব মিলিয়ে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই অর্থে হল মেরামতের পরে নতুন করে রং করা হবে। ভেতরে বসানো হবে বেশ কয়েকটি এসি মেশিন। নতুন চেয়ার কেনা হবে। আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম বসানো হবে। হলের মধ্যে সাজঘরও নতুন রূপ পাবে।

Advertisement

বিদ্যাসাগর হল চত্বরে মুক্তমঞ্চের হাল ফেরানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে আগেই। মুক্তমঞ্চের উপর দিকে ছাউনি নেই। ঠিক হয়েছে, মৃগেনবাবুর বিধায়ক তহবিলের টাকায় টিনের ছাউনি দেওয়া হবে। পাশাপাশি, আরও কিছু কাজের পরিকল্পনা রয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হওয়ার কথা।

মেদিনীপুর শহরে রোজই নানা অনুষ্ঠান, সভা-সম্মেলন হয়। তবে শহরে উন্নতমানের সভাঘর সে ভাবে নেই। বড় মাপের অনুষ্ঠানের জন্য হল বলতে প্রদ্যোত স্মৃতি সদন (জেলা পরিষদ হল), স্পোর্টস কমপ্লেক্স আর এই বিদ্যাসাগর হল। রবীন্দ্র নিলয়, শ্যাম সঙ্ঘের মতো আরও কয়েকটি সভাঘর রয়েছে ঠিকই। তবে সেখানে বড় মাপের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা অসম্ভব। জেলার সদর শহরের সভাঘরগুলোর মধ্যে প্রদ্যোত স্মৃতি সদনের পরিকাঠামোই সব থেকে ভাল। এই হলে এসি রয়েছে, সাউন্ড সিস্টেমও ভাল। এক সময় এই সভাঘরও সংস্কারের অভাবে ধুঁকছিল। সংস্কারের পরে নতুন রূপ পেয়েছে প্রদ্যোত স্মৃতি সদন। একই ভাবে বিদ্যাসাগর হলেরও ভোলবদল হতে চলেছে।

ইতিমধ্যে হলের সামনের উদ্যান নতুন ভাবে সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে। উদ্যানের সামনে নতুন গেট, চারপাশে রেলিং দেওয়া হয়েছে। চারধারে নানা রকমের গাছ লাগানো হয়েছে। উদ্যানে থাকছে ঝরনা, বাহারি আলো। এমকেডিএ-র চেয়ারম্যান তথা শহরের বিধায়ক মৃগেনবাবুর কথায়, “বিদ্যাসাগর হলের পরিকাঠামো উন্নয়নে হলের পরিচালন সমিতি অর্থ সাহায্য চেয়েছিল। সেই মতো এমকেডিএ অর্থ সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মেদিনীপুরের সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ উপকৃত হবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন