গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
রাস্তার কল থেকে পানীয় জল ভরার সময় দু’পক্ষের বচসা গড়াল মারপিটে। যার জেরে খুন হলেন এক বাসিন্দা। মেদিনীপুর শহরের এই ঘটনায় তৃণমূল-বিজেপি-র মধ্যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপি-র দাবি, ওই ব্যক্তি তাদের দলের সক্রিয় কর্মী। ভোট পরবর্তী হিংসার জেরেই তাঁকে খুন করেছে শাসকদল। যদিও এ দাবি অস্বীকার করে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, পড়শিদের মধ্যে গন্ডগোলের জেরেই ওই ঘটনা। এই ঘটনার তিন মহিলা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম দেবাশিস শীল (৪৩)। মেদিনীপুর শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বড়বাজার এলাকায় তাঁর বাড়ি। ধৃতদের মধ্যে দু’জন নাবালিকাকে জুভেনাইল কোর্টে তোলা হয়েছে। দেবাশিসের স্ত্রী বাসন্তী শীলের দাবি, “মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ির সামনে রাস্তার কল থেকে জল ভরার সময় পড়শি স্বপন দে-র পরিবারের লোকজন আমার স্বামীর নামে গালিগালাজ করে। আমাকে মারধরও করা হয়। সে সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন আমার স্বামী। তখন তাঁকেও মারধর করা হয়।” পরে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা দেবাশিসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাতে কোতোয়ালি থানায় স্বপন, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও ছেলের নামে লিখিত অভিযোগ জানান দেবাশিসের পরিবার। দাবি, দেবাশিস বিজেপি-র কর্মী ছিলেন। বাসন্তীর অভিযোগ, “ভোটের পর থেকেই আমার স্বামীকে হুমকি দেওয়া, মারধর করা হয়েছে। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসার কথাও বলা হচ্ছিল। যারা ওকে পিটিয়ে মেরেছে, তারা তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত।”
বিজেপি-র দাবি, দেবাশিস মেদিনীপুর শহরের ১৯৯ বুথের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দলের জেলা সভাপতি সৌমেন তিওয়ারি বলেন, “বিজেপি করার অপরাধে দেবাশিসকে পিটিয়ে মেরেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুক।” ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃত্যুর অভিযোগে সিবিআই তদন্তেরও দাবি করেছেন তিনি।
তবে সেই অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। তিনি বলেন, “মেদিনীপুরের মতো শান্তির শহরে এ ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়। প্রতিবেশীদের মধ্যে জল নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ। কিন্তু তাতে রং চড়িয়ে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছে বিজেপি।”