জল-পেতে: —নিজস্ব চিত্র।
জল আসবে বাড়িতে, আশায় কেটে গিয়েছে বহু বছর। বছর দুয়েক আগে অবশ্য পুরসভার প্রতিশ্রুতি মতো শুরু হয়েছিল নতুন জলপ্রকল্পের কাজ। জল সংযোগের জন্য টাকাও জমা নেয় পুরসভা। বসে পাইপলাইন। কিন্তু জল আসেনি। নতুন করে ভোটের দামামা বেজেছে পাঁশকুড়ায়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন প্রযুক্তিগত কারণে কাজ বন্ধ পুজোর আগেই মিটে যাবে।
পনেরো বছরেও পাঁশকুড়া পুর-এলাকায় বাড়ি বাড়ি জলসংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এখনও শহরের ভরসা সাব-মার্সিবল পাম্প বা নলকূপ। পুরসভা সূত্রে খবর, ২০০২ সালে গঠিত পাঁশকুড়া পুরসভায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষের বাস। পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় থাকাকালীন পরিশুদ্ধ জলের ট্যাপ ছিল শুধুমাত্র পাঁশকুড়া পুরাতন বাজার ও লাগোয়া কিছু এলাকায়। জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের উদ্যোগে পারিচালিত সেই জল সরবরাহ প্রকল্প প্রায় অকেজো।
বছর কয়েক আগে প্রায় ৪০ কোটি টাকা খরচ করে নতুন প্রকল্প হাতে নেয় পুরসভা। বেশ কয়েকটি জলাধার ও পাইপ বসানোর কাজ এগিয়েছে। ওই পর্যন্তই। পুরসভার একটি সূত্রই বলছে, বাড়িতে জল সংযোগ চেয়ে প্রায় ৯ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁশকুড়ায় প্রায় ১১ হাজার পরিবারের বাস। বেশিরভাগ পরিবারের কাছ থেকে নির্ধারিত ২ হাজার টাকা নিয়েও জলসংযোগ দিতে পারেনি পুরসভা।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাহারগ্রাম ক্যানেল বাঁধ পাড়ার অবস্থা আরও খারাপ। দেখা গেল, রাস্তার ধারে বসানো পানীয় জলের কল। তার নীচে জমে রয়েছে বর্ষার জল। পাশেই হাইড্রেন। তবু সেখান থেকেই বালতি ভরছিলেন নিতাই পাত্র। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার আবর্জনা-নোংরা জল এই নালা দিয়েই বের হয়। তবু এই কলের জল নেওয়া ছাড়া তো উপায় নেই।’’
১০ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী কল্যাণ রায়ের অভিযোগ, ‘‘সাধারণ মানুষকে জল দেওয়া হবে বলে টাকা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুরসভার গাফিলতিতে মানুষ এখনও জল পায়নি।’’
বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী নন্দকুমার মিশ্রর দাবি, ‘‘পরীক্ষা মূলকভাবে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ শুরু করা হয়েছিল। প্রযুক্তিগত কারণে এখন তা বন্ধ। দুর্গাপুজোর আগেই শহরের সর্বত্র জল সরবরাহ চালু হয়ে যাবে।’’ যদিও সে কথা মানতে নারাজ বিরোধীরা। এ বার ভোটে পানীয় জল বড় ইস্যু পাঁশকুড়ায়।