সন্ধে নামতেই জটলা শুরু মোড়ে মোড়ে। নেশার টানে এই সব জটলায় ভিড় জমাচ্ছে পড়ুয়ারা। মেদিনীপুরের ঠেকগুলোয় গেলেই চোখে পড়ে কমবয়সীদের ভিড়। ছবিটা বদলাতে এ বার স্কুলস্তরে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী হল জেলা প্রশাসন। ধূমপান রোধে পড়ুয়াদের সচেতন করতে স্কুলে স্কুলে হবে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা। শুরুতে ব্লক স্তরে প্রতিযোগিতা হবে। তারপরে প্রতিযোগিতা হবে জেলায়। পুরস্কৃত করা হবে সফল প্রতিযোগীদের।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, “আজকের দিনে ধূমপান একটা বড় সমস্যা। অল্পবয়সীরাও ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এটা উদ্বেগের। এ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।” এ ক্ষেত্রে সহায়তা করছে জেলার শিক্ষা দফতর। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা নিশ্চিত, এরফলে পড়ুয়াদের মধ্যে ধূমপান নিয়ে সচেতনতা বাড়বে। তারা বুঝতে পারবে, ধূমপানে ঠিক কতটা বিপদ লুকিয়ে রয়েছে। শীঘ্রই এই প্রতিযোগিতা শুরু হবে। এ জন্য রূপরেখাও চূড়ান্ত হয়েছে। ঠিক হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে জেলার ২১টি ব্লকের একটি করে স্কুলে প্রতিযোগিতা হবে। দু’টি বিভাগ থাকবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি ও নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি। ব্লকস্তরের সেরা প্রবন্ধের মূল্যায়ন হবে জেলায়। প্রবন্ধের জন্য ৫০ নম্বর নির্ধারিত থাকছে। জেলাস্তরে মূল্যায়নের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি থাকছে। কমিটিতে থাকবেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, জেলাশাসকের প্রতিনিধি, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) প্রতিনিধি এবং জেলা তথ্য- সংস্কৃতি আধিকারিকের প্রতিনিধি।
কোন ব্লকের কোন স্কুলে প্রতিযোগিতা হবে তা ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। যেমন, কেশপুরের মুগবসান হাইস্কুল, শালবনির মৌপাল হাইস্কুল, গড়বেতার ধাদিকা হাইস্কুল, মেদিনীপুর গ্রামীণের চাঁদড়া হাইস্কুল, খড়্গপুর গ্রামীণের গোকুলপুর হাইস্কুল, কেশিয়াড়ির নছিপুর হাইস্কুল, ডেবরার হরিমতি হাইস্কুল, পিংলার জলচক হাইস্কুল, সবংয়ের সারতা হাইস্কুলে এই প্রতিযোগিতা হবে।
জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, শুধু প্রত্যক্ষ নয়, পরোক্ষ ধূমপানেও বিপদ রয়েছে। অন্যের বিড়ি বা সিগারেটের ধোঁয়া শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরে গেলে পরোক্ষ ধূমপান। প্রতিটি সিগারেট মানুষের আয়ু ১১ মিনিট করে কমিয়ে দেয়। মৌপাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসূনকুমার পড়িয়া মানছেন, “ধূমপান নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো উচিত। না হলে সামনে বড় বিপদ।”