সমীক্ষার পরেও রেলশহরে কেন ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে, তা জানতে বৈঠক ডাকল স্বাস্থ্য দফতর। কাল, মঙ্গলবার খড়্গপুর পুরসভার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতেই নিয়ে ওই বৈঠক হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “খড়্গপুর শহরে সমীক্ষার পরেও কেন ডেঙ্গি হল তা নিয়ে মঙ্গলবার পর্যালোচনা বৈঠকে আলাদা ভাবে আলোচনা করা হবে। তবে রেলের ওয়ার্ডে ডেঙ্গি হওয়ায় আমরা পরে রেলের সঙ্গেও পুরসভাকে নিয়ে একসঙ্গে আলোচনায় বসব।”
গত বছর বর্ষায় এবং শীতে ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছিল খড়্গপুরে। পরিস্থিতি সামলাতে এ বার মে থেকে প্রতি মাসের ১-৫ এবং ১৬-২০ তারিখ স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে পুরসভার স্বেচ্ছাসেবকেরা সমীক্ষা চালাচ্ছেন খড়্গপুরে। তা সত্ত্বেও গত এক মাসে রেলশহরে ৭জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে। চলতি সপ্তাহেও ৯জনের রক্তের এনএস-১ পরীক্ষা করে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। গোটা শহরের প্রায় ৩০জন বিভিন্ন হাসপাতালে জ্বর, বমি ও ম্যাথাব্যথার মতো ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন। এই পরিসংখ্যানে অস্বস্তিতে পড়েছে স্বাস্থ্য দফতর। আর তাই কেন ডেঙ্গি হল জানতে পুরসভাকে নিয়ে তড়িঘড়ি ডাকা হয়েছে বৈঠক।
গত মে মাসে পুরসভার স্বেচ্ছাসেবকরা যখন সমীক্ষার সূচনা করেছিলেন, তখন সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি ব্লিচিং পাউডার ও মশা মারার তেল ছড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু শহরবাসীর অভিযোগ, ঘোষণা মতো কাজ হয়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা চালায়নি পুরসভার স্বেচ্ছাসেবকেরা। আবার যেখানে সমীক্ষা চলেছে, সেখানে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা হয়নি। অধিকাংশ এলাকায় মশা মারার তেল ও ব্লিচিং দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। কয়েকটি ওয়ার্ডে এক-দু’দিন তেল ও ব্লিচিং ছড়িয়েই দায় ঝেড়েছে পুরসভা।
এই অবস্থায় বৃষ্টি শুরু হতেই বেড়েছে মশার উৎপাত। সেই সঙ্গে সামনে এসেছে প্রকোপ দেখা দিয়েছে ডেঙ্গির। যদিও জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা মশাবাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “আতঙ্কের কারণ নেই। আমরা ইতিমধ্যেই শহরে ডেঙ্গি নিয়ে প্রচার চালিয়েছি। রেল হাসপাতালে যেহেতু অনেকে ভর্তি সেখানে লিফলেট বিলি ও ব্যানার লাগানো হয়েছে। রেলও সাহায্য করছে।’’ ডেঙ্গির উপসর্গ দেখলেই হাসপাতালে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
এ দিন নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়েনি। পরিস্থিতি সামলাতে উদ্যোগী হয়েছেন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা। প্রতি মাসে সমীক্ষার হিসেব নিয়ে পুরসভার সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের পর্যালোচনা হয়। এ বার সেই পর্যালোচনা বৈঠকেই ডেঙ্গি নিয়ে আলোচনা করবেন স্বাস্থ্য কর্তারা।