ডেঙ্গির দাপটে রাশ টানতে এখন শীতকালই ভরসা।
মেদিনীপুরে তাপমাত্রা নামতে শুরু করেছে। আর তাতেই আশার আলো দেখছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁদের যুক্তি, আর দিন কয়েক তাপমাত্রা এই জায়গায় থাকলে ডেঙ্গির দাপট অনেকটাই কমবে। সে ভাবে মশার উপদ্রবও থাকবে না। সপ্তাহ দেড়েক ধরে মেদিনীপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩-১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। পতঙ্গবিদেরা জানাচ্ছেন, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রির নীচে নামলে মশারা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। তাদের বংশবিস্তারের হার কমে যায়।
পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “পারদ নামতে থাকলেই মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ কমতে শুরু করে। জেলায় এখন সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা পতঙ্গবাহী রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধানেরও বক্তব্য, “মশার দাপট কমছে। আশা করা যায়, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।’’
পতঙ্গবিদেরা জানাচ্ছেন, তাপমাত্রা শুধু নামলেই হয় না। সেই অবস্থায় কয়েকদিন থিতু হলে তবেই মশা বা জীবাণু জব্দ হতে পারে। সাধারণ ভাবে মশা একমাস বাঁচে। বাইরে তাপমাত্রা নামলে ঘরের ভিতরে অপেক্ষাকৃত গরম জায়গায় আশ্রয় নেয় তারা। অনুকূল পরিবেশ পেলে ফের তারা বাইরে বেরিয়ে আসে। অর্থাৎ মশাকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করে রাখতে পারদকে কমপক্ষে টানা দিন পনেরো ১৪-১৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকতে হবে।
নামছে পারদ
২৭ নভেম্বর
১৬
২৫ নভেম্বর
১৩.৫
২৬ নভেম্বর
১৩
২৮ নভেম্বর
১৪
২৯ নভেম্বর
১৩.৫
৩০ নভেম্বর
১৩.৫
১ ডিসেম্বর
১৪
২ ডিসেম্বর
১৩
গত আট দিনে মেদিনীপুরের সর্বনিম্ন
তাপমাত্রা পরিসংখ্যান ডিগ্রি সেলসিয়াসে
জঙ্গলমহলের এই জেলা জুড়ে এ বার ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত। এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪০। সব থেকে বেশি আক্রান্ত রেলশহর খড়্গপুরে, ২০৯ জন। আবর্জনা ও জমা জল সাফাইয়ে ঘাটতিই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে অভিযোগ। ক’দিন আগের বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছিল। তবে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তাপমাত্রার পারদ নামতে শুরু করায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবু বলেন, “তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও কমেছে। সপ্তাহ দেড়েক আগেও যেখানে জ্বর নিয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে দিনে ১৫০-১৬০ জন ভর্তি হতেন, সেখানে এখন দিনে ৫০-৬০ জন ভর্তি হচ্ছেন।’’
আরও ক’দিন এই ঠান্ডা আবহাওয়া থাকলে ডেঙ্গি-পরিস্থিতির নিশ্চিত ভাবেই উন্নতি হবে বলে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা আশাবাদী।