Howrah-TATA Steel Express

সরডিহা থেকে উঠেই গেল স্টিলের স্টপ

সরডিহা স্টেশন থেকে টাটা-হাওড়া স্টিল সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসের স্টপ প্রত্যাহার করে নিল রেল। রবিবার সরডিহায় থামল না স্টিল এক্সপ্রেস। এতে তুমুল ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকাবাসী ও যাত্রীদের মধ্যে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সরডিহা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

আশঙ্কাই সত্যি হল!

Advertisement

সরডিহা স্টেশন থেকে টাটা-হাওড়া স্টিল সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসের স্টপ প্রত্যাহার করে নিল রেল। রবিবার সরডিহায় থামল না স্টিল এক্সপ্রেস। এতে তুমুল ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকাবাসী ও যাত্রীদের মধ্যে।

এলাকার নিত্যযাত্রীদের বহু আন্দোলনের পরে ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে টাটা-হাওড়া স্টিল সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস সরডিহা স্টেশনে স্টপেজ দেওয়া শুরু করেছিল। বিধানসভা ভোটের আগে এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবিরও। ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম রীতিমতো অপ্রস্তুভাবে জানান, বিষয়টি নিয়ে রেলের ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন। কাজ না-হলে স্টপের দাবিতে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে অবস্থানে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এ দিনও রেলমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন কুনার। রেল প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরেও চিঠি দিয়েছেন। সাংসদ বলেন, ‘‘সমস্যা না মিটলে মানুষের স্বার্থেই আমাকেও আন্দোলনে সামিল হতে হবে।’’

Advertisement

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের টাটা-খড়্গপুর শাখার সরডিহা স্টেশনটি ঝাড়গ্রাম জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। সেটি রয়েছে ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়া এলাকায়। মানিকপাড়া এলাকাটি জনবহুল। জেলার অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্রও বটে। ঝাড়গ্রাম ব্লক ভেঙে পৃথক মানিকপাড়া ব্লক গঠনের বিষয়টি রাজ্যের বিবেচনাধীন রয়েছে। এই রেল স্টেশনে স্টিল ছাড়া অন্য কোনও এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজও নেই। লকডাউনের পরে টাটা-খড়্গপুর শাখায় লোকাল ট্রেন চলাচল এখনও শুরু হয়নি। ফলে মানিকপাড়া ও সরডিহা এলাকার বহু মানুষের হাওড়া ও টাটায় যাওয়ার জন্য যাওয়ার একমাত্র ভরসা ছিল স্টিল এক্সপ্রেস।

করোনা পর্বে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে ট্রেনের চাকা সম্প্রতি গড়াতে শুরু করেছে। এখন অগ্রিম আসন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। সরডিহা স্টেশনে রিজার্ভেশন কাউন্টার না থাকায় যাত্রীরা ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ইন্টারনেটে আসন সংরক্ষণ করেন। কিন্তু মঙ্গলবার ১ ডিসেম্বর থেকে ছবিটা বদলে যায়। ওই দিন থেকে অনলাইনে সরডিহা স্টেশন থেকে অগ্রিম আসন সংরক্ষণের ‘অপশন’টাই তুলে দেওয়া হয়। সরডিহা থেকে সুপার ফাস্ট স্টিল এক্সপ্রেস প্রত্যাহারের আশঙ্কায় মঙ্গলবার রাতে স্টেশন ম্যানেজারকে স্মারকলিপিও দেন এলাকাবাসীর একাংশ। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।

রবিবার সকালে হাওড়াগামী স্টিল থামেনি। রাতেও টাটাগামী ট্রেনটি সরডিহায় থামেনি। এ দিন বিজেপি-র স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মী ওই ট্রেন ধরার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। এই ঘটনায় তাঁরাও বিভ্রান্ত। নিকপাড়ার বিজেপি নেতা রথীন রায় বলেন, ‘‘কেন এমন হল বোধগম্য হচ্ছে না। সাংসদকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ সরডিহার বাসিন্দা পেশায় অর্ডার সাপ্লায়ার দুলাল পাল বলেন, ‘‘লকডাউনের পরেও ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকায় কলকাতা যেতে পারিনি। স্টিল চালু হওয়ায় কলকাতায় মালপত্র আনতে যাচ্ছিলাম। স্টপ উঠে যাওয়ায় কীভাবে কাজ করব ভেবে পাচ্ছি না।’’

জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহার কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকার মানুষের কতটা ভাল চায় তা প্রমাণ হয়ে গেল। স্টপের দাবিতে আন্দোলনে নামব।’’ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘১৬ অক্টোবর থেকে স্টিলের সময়ে বিশেষ ট্রেন হিসেবে আপ ও ডাউন ট্রেনটি চালানো হচ্ছে। ট্রেনের যাত্রা-সময় কমাতেই পরীক্ষামূলক ভাবে রবিবার থেকে সরডিহার স্টপ প্রত্যাহার করা হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে ওই আধিকারিক মনে করিয়ে দিয়েছেন, যেখানে যাত্রী সংখ্যা আশানুরূপ নয় এবং ট্রেনের গতি বাড়ানো একান্ত প্রয়োজন, সেখানে স্টপ তুলে দেওয়াই হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন