Tamluk

নলি কেটে যুবতী খুন, আটক স্বামী ও ‘প্রেমিক’

রবিবার সকালে ভাড়া বাড়ির পাশের ধান জমি থেকে উদ্ধার হল সেই তরুণীর নলি কাটা দেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:৩৬
Share:

ধানজমিতে পড়ে আছে যুবতীর দেহ। রবিবার। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

মাত্র তিনদিন আগে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তিন বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে এসে উঠেছিল যুগল। এর মধ্যেই রবিবার সকালে ভাড়া বাড়ির পাশের ধান জমি থেকে উদ্ধার হল সেই তরুণীর নলি কাটা দেহ। মৃতার নাম মানসী পতি রাণা (২১)।

Advertisement

তমলুক শহরের স্টিমারঘাটের কাছে আবাসবাড়ি এলাকার এই ঘটনায় তরুণীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে মানসীর ‘স্বামী’র পরিচয় দিয়ে বাড়ি ভাড়া নেওয়া এক যুবকের বিরুদ্ধে। খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে ইতিমধ্যে আটকও করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে ওই তরুণীর স্বামী মন্টু রাণাকেও। পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে খুনে ব্যবহৃত একটি হাঁসুয়াও।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মানসীর সঙ্গে ওই যুবকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। অন্যদিকে, মানসীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও চলছে। বিগত বেশ কয়েকমাস বাপের বাড়িতেই থাকছিল মানসী। তারপর মানসীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে কয়েকদিন আগেই তমলুকে আবাসবাড়িতে একটি ভাড়া বাড়িতে ওঠেন ওই যুবক। এরপর রবিবার সকালেই মানসীর গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই ঘটনা বলে পুলিশের অনুমান। তবে ঠিক কী কারণে ওই তরুণীকে খুন করা হয়েছে, কিংবা কে খুন করেছে— তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তরুণীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, তমলুক শহর সংলগ্ন নকিবসান গ্রামের তরুণী মানসীর সঙ্গে কয়েকবছর আগে বিয়ে হয়েছিল শহরের সৈয়দপুর এলাকার মন্টু রাণার সঙ্গে। মন্টু মণ্ডপ বাঁধার কাজ করে। তাঁদের তিন বছরের এক শিশুকন্যাও রয়েছে। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়ই বাপের বাড়িতে এসে থাকতেন মানসী। এর মধ্যেই মানসীর সঙ্গে পাশের গ্রামের এক যুবকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জানা গিয়েছে, ওই যুবকের শহরের রাধাবল্লভপুরে মাংসের দোকান রয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার আবাসবাড়িচরের বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় একটি টালির চালের ঘর ভাড়া নিয়েছিল ওই যুবক এবং মানসী। বাড়ির মালিক জানাচ্ছেন, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়েই তাঁরা ওই বাড়ি ভাড়া নেন এবং তাঁদের সঙ্গে একটি শিশুকন্যাও ছিল। রবিবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ মানসীর রক্তাক্ত দেহ বাড়ির সামনের ধান জমিতে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় এক বালক। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।

খুনের খবর পেয়ে তমলুকের এসডিপিও, ওসি-সহ পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ বাড়ির ভিতর মেঝেয় পড়ে থাকা একটি রক্তাক্ত হাঁসুয়াও উদ্ধার করে। পুলিশ তদন্তে নেমে মোবাইল ফোন নম্বর ট্র্যাক করে ওই বাড়ি ভাড়ায় নেওয়া যুবককে আটক করে। বাড়ির মালিক ভারতী ধাড়া বলেন, ‘‘তিনদিন আগে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে মাসে ৫০০ টাকায় ঘর ভাড়া নিয়েছিল। কখনও কোনও সন্দেহ হয়নি। সকালে নদীর চরে ঘাস কাটতে চলে গিয়েছিলাম। খবর পেয়ে এসে দেখি ভাড়া বাড়ির মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় জমিতে পড়ে আছে।’’ তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে অনুমান বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন