প্রতীকী ছবি।
ছয় থেকে ১১। এ বার একেবারে ১৬৮!
পশ্চিম মেদিনীপুরে লাফিয়ে বাড়ছে মহিলা পরিচালিত বুথের সংখ্যা। জেলায় এ বার লোকসভা ভোটে দেড়শোরও বেশি বুথ মহিলারা পরিচালনা করবেন। সেই মতোই যাবতীয় প্রস্তুতি সারছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে সবদিক খতিয়ে দেখতে এক বৈঠকও হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ওসি (ইলেকশন) দীপ ভাদুড়ি বলেন, ‘‘মহিলা পরিচালিত বুথের সংখ্যা বাড়ানোর সবরকম চেষ্টা চলছে।’’
জেলায় প্রথম মহিলা পরিচালিত বুথ করা হয় গত লোকসভা ভোটে। ২০১৪ সালের ওই ভোটে ৬টি বুথ মহিলারা পরিচালনা করেছিলেন। গত বিধানসভা ভোটেও কিছু বুথ মহিলারা পরিচালনা করেছেন। ২০১৬ সালের ওই ভোটে ১১টি বুথের দায়িত্বে মহিলারা ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বার লোকসভা ভোটে জেলায় মহিলা পরিচালিত বুথের সংখ্যা হবে ১৬৮।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘জেলায় ১৫টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। ঠিক করা হয়েছিল, প্রতি কেন্দ্রে অন্তত ১০- ১২টি মহিলা পরিচালিত বুথ হবে। সেই মতোই যাবতীয় পরিকল্পনা হয়েছে।’’ কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে তার জন্য অতিরিক্ত ভোটকর্মীরও প্রয়োজন হয়। বুথপিছু একজন অতিরিক্ত কর্মী রাখা হয়। সেই হিসেবে ১৬৮টি বুথে মহিলা ভোটকর্মী প্রয়োজন ৮৪০ জন। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই সংখ্যক মহিলা ভোটকর্মী জেলায় রয়েছেন।
এই সব বুথের ছবিটা কী হবে? প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, প্রথমেই যিনি সচিত্র পরিচয়পত্র দেখবেন তিনি যেমন মহিলা হবেন, একেবারে শেষে যিনি আঙুলে কালি লাগিয়ে দেবেন তিনিও তেমন মহিলা হবেন। অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট বুথগুলোর রিটার্নিং অফিসার থেকে পোলিং অফিসার, সকলেই হবেন মহিলা। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, এতগুলো বুথে মহিলাদের দিয়ে ভোট প্রক্রিয়া চালানো আগে কখনও হয়নি এই জেলায়। ওই সূত্রের বক্তব্য, বর্তমানে চাকরির প্রতিটি ক্ষেত্রেই মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। সরকারি ক্ষেত্রে মহিলা কর্মীর সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে তাতে শুধু পুরুষদের উপর ভরসা করে ভবিষ্যতে ভোট পরিচালনা করা কঠিন হবে। কারণ, ভোটের কাজে সরকারি কর্মীদেরই নেওয়া হয়।
ভোটকর্মীদের আগের দিন সমস্ত সরঞ্জাম দিয়ে ভোট কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে সারাদিন দাঁড়িয়ে থেকে ভোটের সরঞ্জাম নেওয়া, তারপর বাস করে বুথে যাওয়া, এ সব ঝক্কিরই। অনেক বুথের তেমন ভাল পরিকাঠামোও থাকে না। পুরুষেরা নানা প্রতিকূল পরিবেশে কাজ চালিয়ে নিতে পারেন। মহিলাদের পক্ষে অনেক সময়ে তা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আর সবথেকে বড় বিষয় হল নিরাপত্তা। জেলা পুলিশের এক কর্তার অবশ্য আশ্বাস, ‘‘বুথে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।’’ প্রশাসন সূত্রে খবর, মহিলা ভোটকর্মীরা ভোটের দিন ভোরেই বুথে পৌঁছতে পারেন।