ঘরে বসেই দেখা মিলবে সুবর্ণরেখার

গাডরাসিনি পাহাড় বা চিল্কিগড় মন্দির তো আছেই, জঙ্গলমহলের পর্যটন মানচিত্রে যোগ হতে চলেছে নয়া পালক। কটেজের ঘরে বসেই যদি এ বার সুবর্ণরেখার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, মন্দ কি! সঙ্গে রয়েছে নীলকুঠির ইতিহাসের হাতছানি।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ১২:০৫
Share:

গাডরাসিনি পাহাড় বা চিল্কিগড় মন্দির তো আছেই, জঙ্গলমহলের পর্যটন মানচিত্রে যোগ হতে চলেছে নয়া পালক। কটেজের ঘরে বসেই যদি এ বার সুবর্ণরেখার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, মন্দ কি! সঙ্গে রয়েছে নীলকুঠির ইতিহাসের হাতছানি। তবে এ জন্য এখনও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, বেলিয়াবেড়ার এই নতুন পর্যটন কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়ার কুলিয়ানা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজনাগুড়ি মৌজায় রয়েছে প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ। নীলকুঠি লাগোয়া এলাকাটিকে এ বার পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে বেলিয়াবেড়া পঞ্চায়েত সমিতি।

জঙ্গলমহল অ্যাকশন প্ল্যান (জেএপি) ও পঞ্চায়েত সমিতির তহবিলের প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আনন্দধারা প্রকল্পে সুবর্ণরেখার ধারে তৈরি হচ্ছে দোতলা প্রকৃতি-পর্যটন কেন্দ্র। কেন্দ্রটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুবর্ণরেখা’। ভবন তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে।

Advertisement

কয়েক মাস পরেই পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে ভবনের দোতলার তিনটি ঘর। বাতানুকূল ব্যবস্থার সুবিধাযুক্ত দোতলার তিনটি ঘরের সঙ্গেই শৌচাগার রয়েছে। প্রতিটি ঘরে দু’জন করে থাকতে পারবেন। দু’জনের অতিরিক্ত থাকলে আলাদা ভাড়া দিতে হবে। প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রের দোতলার ব্যালকনি থেকে চারপাশের নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে পাবেন পর্যটকরা। ঘরের জানালা থেকেই দেখা যাবে সুবর্ণরেখা। ইচ্ছে হলে সুবর্ণরেখার জলে ছিপ ফেলে মাছও ধরতে পারেন পর্যটকেরা।

স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রটি চালাবেন। পর্যটকদের খাওয়া-দাওয়া, ঘরদোর পরিষ্কার করার দায়িত্বে থাকবেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। ভবনের একতলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার জন্য সেমিনার হল রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে গোষ্ঠীর সদস্যদের থাকার জায়গা ও রান্নাঘর।

যেখানে এই পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে, সেই বাজনাগুড়ি এলাকাটি কুঠিঘাট নামে বেশি পরিচিত। মূলত নীলকুঠির জন্যই এমন নাম। এলাকার নীলকুঠির ইতিহাসও প্রাচীন। শোনা যায়, ১৮৬৭ সাল নাগাদ এই নীলকুঠিতে নীল তৈরির ভাটিখানা চলত। নীলকর সাহেবরা স্থানীয় চাষিদের দাদন দিয়ে নীলের চাষ করাতেন। তারপর ভাটিতে প্রাকৃতিক নীল তৈরি করা হত। জনশ্রুতি, বেলিয়াবেড়ার নীলকর সাহেবরা তেমন অত্যাচারী ছিলেন না। তাই এলাকায় নীলকরদের বিরুদ্ধে কোনও আন্দোলনের প্রামাণ্য ইতিহাস নেই। এলাকায় একটি কালী মন্দির ও রামকৃষ্ণ আশ্রমও রয়েছে। বেলিয়াবেড়ার বিডিও কৌশিক ঘোষ বলেন, “এলাকার বহু মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রোজগারের স্থায়ী বন্দোবস্ত করার জন্য প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রটি চালু করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন