মজুরি বৃদ্ধির দাবি, বিক্ষোভে ঠিকাকর্মীরা

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সরব হয়েছিলেন ঠিকাকর্মীরা। শ্রম দফতরের আলোচনায় রফাসূত্র বেরোয়নি। এরই মাঝে এক ঠিকাদার বদল হওয়ায় কয়েকজন ঠিকাকর্মী কাজ হারানোর আশঙ্কা করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০১:২২
Share:

সরব: রূপনারায়ণপুরের কারখানায় ঠিকাকর্মীদের বিক্ষোভ। রবিবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সরব হয়েছিলেন ঠিকাকর্মীরা। শ্রম দফতরের আলোচনায় রফাসূত্র বেরোয়নি। এরই মাঝে এক ঠিকাদার বদল হওয়ায় কয়েকজন ঠিকাকর্মী কাজ হারানোর আশঙ্কা করেছিলেন। এমন আবহে ফের শ্রমিক আন্দোলন শুরু হল খড়্গপুর গ্রামীণের রূপনারায়ণপুরে একটি নির্মাণশিল্পের ভারী যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানায়।

Advertisement

শনিবার এই কারখানার গার্ডেনিংয়ের ঠিকাদার বদল হওয়ায় তাঁর অধীনে কর্মরত শ্রমিকরা কর্মচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন। সেই নিয়ে রবিবার শুরু হয় আন্দোলন। ঠিকাকর্মীদের প্রতি কারখানা কর্তৃপক্ষ বঞ্চনা করছেন, মূলত এই অভিযোগেই সরব হয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, ঠিকাদার বদল হলেও কর্মী ছাঁটাই হবে না বলে প্রশাসনিক বৈঠকে বহু আগেই আশ্বাস দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গার্ডেনিংয়ের ঠিকাদার বদল হওয়ায় ওই ঠিকাকর্মীদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পাশাপাশি মজুরি বৃদ্ধির দাবিও জানানো হয়েছে। এ দিন সকাল থেকে কারখানায় ঢুকে হাজিরা দিলেও কাজে যোগ দেননি ঠিকাকর্মীরা। স্থায়ী কর্মী দিয়ে উৎপাদন সচল রাখার চেষ্টা হলেও উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বলেই ঠিকাশ্রমিকদের দাবি। পরে কাউকে ছাঁটাই করা হচ্ছে না বলে কর্তৃপক্ষ জানান। তবে মজুরি বৃদ্ধির আশ্বাস না মেলায় আন্দোলন চলতে থাকে।

নির্মাণশিল্পের ভারী যন্ত্রাংশ তৈরির এই কারখানায় সাতশোর বেশি ঠিকাকর্মী রয়েছেন। ২০১৫ সাল থেকেই ওই শ্রমিকেরা মজুরি বৃদ্ধির দাবি তুলে আসছেন। তবে এখনও মজুরি বাড়েনি। তাই গত কয়েকমাস ধরে ফের আন্দোলন শুরু হয়েছে। ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেছে শ্রম দফতর। তবে সুরাহা হয়নি। কারখানার ঠিকাকর্মী সঞ্জয় পড়িয়া, সালোক টুডুরা বলেন, “শ্রম দফতরে আলোচনা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ আমাদের মজুরি বৃদ্ধি করেননি। তার মধ্যে শনিবার ঠিকাদার বদল হওয়ায় কয়েকজনকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হবে বলেছিল। পরে অবশ্য বলেছে ওঁরা কাজ করবে। কিন্তু মজুরি বৃদ্ধির আশ্বাস না মেলায় আমরা কারখানায় উপস্থিত হলেও কাজ করছি না। এতে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে।”

Advertisement

এ দিন বেলা বাড়ার পরে উত্তেজনা ছড়ায় কারখানা চত্বরে। ১ নম্বর গেটের কাছে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ চলে। দফায়-দফায় আলোচনাও হয়েছে।

ঠিকাশ্রমিকদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন আইটাক নেতারা। আইটাকের জেলা নেতা বিপ্লব ভট্ট বলেন, “২০১৩ সালের পরে ঠিকাশ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি। শ্রম দফতর কারখানা কর্তৃপক্ষের কথা মতো চলছে। এর মধ্যে কয়েকজন শ্রমিককে কাজ থেকে বসানো হয়েছে। শ্রমিকেরা ন্যায্য দাবিতেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নেমেছেন।”

জেলার উপ-শ্রম আধিকারিক বিতান দে-র অবশ্য বক্তব্য, “মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা গত সপ্তাহেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছি। কারখানা কর্তৃপক্ষ সময় চেয়েছেন। কিন্তু তার মাঝেই ঠিকাদার বদল ঘিরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের ভুল বোঝাবুঝিতে ফের আন্দোলন শুরু হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁরা ঠিকাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন।” আজ, সোমবারই তড়িঘড়ি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকেছেন উপ-শ্রম আধিকারিক। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে মুখ খোলেননি। ওই কারখানার প্রশাসনিক প্রধান পঞ্চম মাইতি ‘মিটিংয়ে ব্যস্ত রয়েছি’ বলে ফোন কেটে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন