কৃষ্ণেন্দু খাটুয়া।
শনিবার রাত আটটা নাগাদ স্ত্রী উমার সঙ্গে টেলিফোনে শেষ কথা হয়েছিল। রবিবার সকালে খবর এল, তিনতলা বাড়ি থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে স্বামী কৃষ্ণেন্দু খাটুয়ার (৩০)। গোয়ায় কাজে গিয়ে কাঁথির ভূপতিনগরের বাসিন্দা কৃষ্ণেন্দুর অপমৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে বলে দাবি তাঁর পরিবারের।
বাবা পঁয়ষট্টি বছরের হিমাঙ্ক খাটুয়া পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী। বাড়িতে মা, স্ত্রী, ভাই ও বছর দেড়েকের ছেলে রয়েছে। সংসার চালানোর প্রয়োজনে ও বাবার চিকিৎসার খরচ জোগাতে বছর চারেক আগে গোয়ায় কাজ করতে গিয়েছিলেন ভূপতিনগরের শিমুলিয়া গ্রামের যুবক কৃষ্ণেন্দু।
পরিবার সূত্রে খবর, গত ২৯ জানুয়ারি শেষবার বাড়ি এসেছিলেন কৃষ্ণেন্দু। গোয়ার মাপুসা থানা এলাকার এক ঠিকাদারের অধীনে বিদ্যুৎকর্মী হিসেবে কাজ করতেন কৃষ্ণেন্দু। মাপুসার একটি ওষুধ কোম্পানির নবনির্মিত বিল্ডিংয়ে বিদ্যুতের কাজ চলছিল। সেই বাড়িরই তিনতলায় বিদ্যুতের কাজ করছিলেন তিনি। শনিবার রাত সাড়ে ন’টা থেকে দশটা নাগাদ ওই বিল্ডিংয়ের উপর থেকে কৃষ্ণেন্দু নীচে পড়ে যান অভিযোগ। ওই এলাকার কাছাকাছিই কাজ করতেন ভূপতিনগরের ধাইপুকুরিয়া গ্রামের যুবক দীপক দাস। দীপকই রবিবার কৃষ্ণেন্দুর মৃত্যুর খবর তাঁর বাড়িতে জানান বলে পরিবারের দাবি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী কৃষ্ণেন্দুর এমন মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কৃষ্ণেন্দুর ভাইপো দেবাশিস খাটুয়া বলেন, “কাকার কর্মস্থলে কিছু ঝামেলা হচ্ছিল। টেলিফোনে বাড়িতে তা জানিয়েছিলেন। কিন্তু কী নিয়ে ঝামেলা বা কার সঙ্গে ঝামেলা, সে বিষয়ে কিছু জানাননি। তাই আমাদের মনে হচ্ছে, কাকার এ ভাবে মৃত্যু পিছনে কোনও রহস্য রয়েছে।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণেন্দুর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর তাঁরা গোয়ায় যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। সেখানকার মাপুসা থানার পক্ষ থেকে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। ভাই দিব্যেন্দু ও ভাইপো দেবাশিস সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মিহির ভৌমিক বলেন, “পরিবারটি অত্যন্ত দরিদ্র। গোয়ায় মৃতদেহ আনতে যাওয়ার মতো তাঁদের আর্থিক সামর্থ্য নেই। তাই আমরা পরিবারটিকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছি। ওদের সংসার এখন কী করে চলবে সেটাই আমরা ভাবছি। ’’
স্ত্রী উমা খাটুয়া বলেন, “শনিবার রাত আটটা নাগাদ টেলিফোনে শেষ কথা হয়। তারপরই এরকম ঘটনা ভাবতেই পারছি না।’’