অগস্টে চালু হচ্ছে ঘাটাল কলেজের ছাত্রী নিবাস

অবশেষে প্রত্যাশা পূরণ। দীর্ঘদিনের দাবি মেনে আগামী অগস্ট মাস থেকেই খুলতে চলেছে ঘাটাল কলেজের নবনির্মিত মহিলা হস্টেল। ঘাটাল কলেজ সংলগ্ন চত্ত্বরে ছাত্রীদের জন্য ওই হস্টেল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। অগস্ট মাসে ওই হস্টেলের উদ্বোধন হবে। ছাত্রীরাও নতুন হস্টেলে অগস্ট মাস থেকেই থাকতে পারবেন বলে জানা গিয়েছে। ঘাটাল কলেজের অধ্যক্ষ লক্ষ্মীকান্ত রায় বলেন, “চলতি মাসেই হস্টেলের জন্য রাঁধুনি, মহিলা নিরাপত্তারক্ষী-সহ প্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগ হয়ে যাবে। অগস্ট মাসের শেষ থেকেই হস্টেল চালু হবে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৪ ০১:১৭
Share:

শুরুর অপেক্ষায়।—নিজস্ব চিত্র।

অবশেষে প্রত্যাশা পূরণ। দীর্ঘদিনের দাবি মেনে আগামী অগস্ট মাস থেকেই খুলতে চলেছে ঘাটাল কলেজের নবনির্মিত মহিলা হস্টেল।

Advertisement

ঘাটাল কলেজ সংলগ্ন চত্ত্বরে ছাত্রীদের জন্য ওই হস্টেল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। অগস্ট মাসে ওই হস্টেলের উদ্বোধন হবে। ছাত্রীরাও নতুন হস্টেলে অগস্ট মাস থেকেই থাকতে পারবেন বলে জানা গিয়েছে। ঘাটাল কলেজের অধ্যক্ষ লক্ষ্মীকান্ত রায় বলেন, “চলতি মাসেই হস্টেলের জন্য রাঁধুনি, মহিলা নিরাপত্তারক্ষী-সহ প্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগ হয়ে যাবে। অগস্ট মাসের শেষ থেকেই হস্টেল চালু হবে।”

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তিনতলাবিশিষ্ট এই ছাত্রী নিবাসে ৫০টি ঘর রয়েছে। হস্টেলের মধ্যেই রয়েছে পানীয় জলের ব্যবস্থা-সহ খেলাধূলার জায়গাও। অধ্যক্ষের কথায়, “এই ছাত্রী নিবাসের জন্য ইউজিসি ৯০ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছে। বাকি টাকা কলেজের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করা হয়েছে।” কলেজ সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে এখন হস্টেলে ১২০ জন ছাত্রী থাকতে পারবেন। পরে ঘরের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। কলেজের ছাত্রদের জন্যও একটি পৃথক হস্টেল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই কলেজে আর দু’টি বিষয়ের উপর এমএ পাঠ্যক্রম চালু হবে। ফলে আগামী দিনে কলেজে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা আরও বাড়বে। তাই ছাত্রদের জন্যও একটি হস্টেল তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বছর পাঁচেক আগে কলেজের নিজস্ব জমিতে ছাত্রী নিবাসের ভবনের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকদার মাঝ পথে কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় ছাত্রী নিবাস নির্মাণে নির্ধারিত সময়ের তেকে বেশি সময় লাগল বলে জানা গিয়েছে। লক্ষ্মীকান্ত রায় বলেন, “অগস্ট মাসের মাঝামাঝি হস্টেলে থাকার জন্য ফর্ম বিলি শুরু হবে।”

আগে ঘাটাল মহকুমা এলাকায় একমাত্র ঘাটাল শহরেই একটি কলেজ ছিল। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে ঘাটাল মহকুমায় আরও তিনটি কলেজ (চাঁইপাট,নাড়াজোল ও চন্দ্রকোনা) চালু হয়েছে। তবে তার পরেও ঘাটাল কলজে ছাত্রছাত্রীর চাপ কমেনি। কেননা ঘাটাল কলেজে কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের প্রায় সব বিষয়ই স্নাতক স্তরে পড়ানো হয়। এছাড়াও এই কলেজে বাংলা ও সংস্কৃত বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ানো হয়। ফলে ঘাটাল কলেজে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশি। বর্তমানে কলেজে প্রায় ৩ হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। স্নাতকোত্তর স্তরে রয়েছেন ১৮০ জন পড়ুয়া। তার মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় এক হাজারের মতো। এতদিন কলেজে হস্টেল না থাকায় ছাত্রীদের আসতে সমস্যায় পড়তে হত।

স্থানীয় ও কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬১ সালে তৈরি ঘাটাল কলেজ সংলগ্ন এলাকায় আগে একাধিক মেস ছিল। কলেজে হস্টেল না থাকায় এতদিন ছাত্রছাত্রীদের ভরসা ছিল এই সকল মেস। বাড়ি দূরে হলে রোজ যাতায়াতের ধকল এড়াতে এই সকল মেসে থেকেই পড়াশুনো করতেন পড়ুয়ারা। ঘাটাল কলেজে এমএ পড়ছেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা সুমিত্রা সানগিরী, কেশিয়াড়ির হীরা বাস্কে, গড়বেতার বাসন্তি নাথেরা। সুমিত্রার কথায়, “এত দিন বাধ্য হয়ে মেসে থাকতাম। মেসে ঘর কম থাকায় একসঙ্গে কষ্ট করে থাকি। তাতে পড়াশোনাও ঠিকমতো হয় না।” অন্য দিকে, চন্দ্রকোনার তাতারপুরের বাসিন্দা স্বাগতা চক্রবর্তী ঘাটাল কলেজের ইংরেজি (স্নাতক) বিভাগের ছাত্রী। স্বাগতা কোনও মেসে থাকার জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকেই আসছেন। স্বাগতার কথায়, “অনেক কষ্ট করেই কলেজে আসি। হস্টেল চালু হলে বাঁচব।” তবে বর্তমানে ঘাটাল শহরে মেসের সংখ্যা কমেছে। ফলে শহরে থাকার জায়গা পাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন ছাত্রছাত্রীরা।

তাই ছাত্রী নিবাস চালু হওয়ার খবরে স্বস্তিতে কলেজ ছাত্রীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন