অঙ্গনওয়াড়িতে নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে এই অভিযোগে কর্মপ্রার্থীদের একাংশ তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ব্লক শিশুকল্যাণ প্রকল্প আধিকারিকের কার্যালয়ে। গত বৃহস্পতিবার থেকে ওই অফিস বন্ধ হয়ে রয়েছে। সোমবার বিষয়টি নজরে আসার পরে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১০ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি করে অঙ্গনওয়াড়ির সহায়ক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আবেদনকারীদের পরীক্ষা নেওয়ার পরে সাধারণদের নিয়োগ হলেও নানা জটিলতায় থমকে যায় তফসিলিদের নিয়োগ। তখন বিরোধী তৃণমূল অভিযোগ করেছিল, ২০১০ সালের জুলাইয়ে নিয়োগ পরীক্ষার সময় জাতিগত শংসাপত্র না থাকলেও অনেকেই অগস্টে পাওয়া শংসাপত্র সংযুক্ত করে তফসিলির সুযোগ পেয়েছে। এই অভিযোগেই স্থগিত হয়ে যায় নিয়োগ। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি না পাওয়ায় হাইকোর্টে যান ১২ জন কর্মপ্রার্থী। সম্প্রতি হাইকোর্ট মহকুমাশাসককেয নির্দেশ দেয়, বিষয়টি খতিয়ে দেখে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। সেই মতো ব্লক প্রকল্প আধিকারিক মামলাকারী কয়েকজনের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেন। এতেই চটে গিয়ে তৃণমূল সমর্থিত একাংশ কর্মপ্রার্থী গত বৃহস্পতিবার প্রকল্প আধিকারিকের কার্যালয় বন্ধ করে দেন। শনি ও রবি অফিস বন্ধ ছিল। সোমবারও অফিস না খোলায় শোরগোল পড়ে যায়। ব্লক শিশুকল্যাণ প্রকল্প আধিকারিক প্রবীর দত্ত এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। বিডিও অনিন্দিতা রায়চৌধুরী বলেন, “ব্লক প্রকল্প আধিকারিক আমাকে চিঠি দিয়ে জানান, কিছু লোক ওঁর অফিস বন্ধ করে দিয়েছেন।” ব্লক তৃণমূল সভাপতি গৌতম জানা এর সঙ্গে দলের যোগ মানতে চাননি। তবে তিনি বলেন, “ওই প্রকল্প আধিকারিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি করেছেন। তাই যাঁরা পরীক্ষা দিয়েও নিয়োগপত্র পাননি, তাঁরা অফিস বন্ধ করেছেন বলে শুনেছি। আর কর্মপ্রার্থীদের কেউ তৃণমূল করতেই পারেন। তবে আমরা কোনও অফিস বন্ধের পক্ষে নই।”
মহকুমাশাসক ও বিডিওকে লিখিত শুক্রবার অভিযোগ করেন শিশু কল্যাণ আধিকারিক। সোমবার পঞ্চায়েত সমিতির তরফে আবার ব্লক শিশুকল্যাণ প্রকল্প আধিকারিকের বিরুদ্ধে মহকুমাশাসককে অভিযোগ জানানো হয়। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সীতা মুর্মু বলেন, “মহকুমাশাসক ও বিডিও-কে অন্ধকারে রেখে প্রকল্প আধিকারিক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।” এ প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “অফিস খুলতে ব্যবস্থা নেব। পঞ্চায়েত সমিতির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।”