অনুমতি ছাড়া পাট্টার জমিতে পুকুর কাটায় অভিযুক্ত তৃণমূল

অনুমতি না নিয়ে একশো দিনের কাজে পাট্টার জমিতে পুকুর কাটার অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের কাছে এই বিষয়ে বারবার অভিযোগ জানানো হলেও সুরাহা হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৪ ০০:৫৬
Share:

অনুমতি না নিয়ে একশো দিনের কাজে পাট্টার জমিতে পুকুর কাটার অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের কাছে এই বিষয়ে বারবার অভিযোগ জানানো হলেও সুরাহা হয়নি। এমনই অভিযোগ জানিয়ে বুধবার রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মিনার কাছে চিঠি দিলেন সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। তাঁর অভিযোগ, সবংয়ের ভেমুয়া গ্রামের বাসিন্দা সুদাম ঘড়াই ও তাঁর স্ত্রী কবিতা ঘড়াইয়ের নামে থাকা একটি পাট্টার জমিতে একশো দিনের কাজে মাটি কেটেছে স্থানীয় পঞ্চায়েত। এ বিষয়ে ওই পাট্টা জমির মালিকের অনুমতি নেওয়া হয়নি। সুদামবাবু প্রশাসনে বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তারই প্রতিবাদে মানসবাবুর এই চিঠি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সবংয়ের ভেমুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সিপিএমের আমলে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে পাট্টায় জমি দেওয়া হয়েছিল। সেই তালিকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর মৌজায় পাট্টায় ২০ ডেসিমেল করে মোট ৪০ ডেসিমেল জমি পান সুদাম ঘড়াই ও তাঁর স্ত্রী। ওই জমিটি পুকুর সংলগ্ন এলাকায়। বছর ছ’য়েক আগে ওই দম্পতির অনুমতি নিয়েই এলাকার প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ওই জমি থেকে মাটি কেটে ব্যবহার করা হয়। তবে চলতি বছরের জুন মাসে একশো দিনের প্রকল্পে ফের ওই জমিটি কেটে পুকুরের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওই দম্পতির। তাঁদের আরও অভিযোগ, এর জন্য কোনও অনুমতি গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি। সুদাম ঘড়াই বলেন, “জমিটি পাট্টায় পেয়ে কোনওরকমে চাষ করে দিন কাটাচ্ছিলাম। এখন জমি থেকে এভাবে মাটি কেটে নেওয়ায় আমাদের চাষে অসুবিধা হচ্ছে। আমরা কংগ্রেস সমর্থক হওয়ায় রাগে তৃণমূল এরকম করেছে।” সুদামবাবু জানান, তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত, পুলিশ, ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতিতে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। এরপর তিনি ঘটনাটি স্থানীয় বিধায়ক মানস ভুঁইয়াকে মৌখিকভাবে জানান। আর তারপর মানসবাবু বিষয়টি রাজ্যের মুখ্য সচিবকে জানান।

কেন অনুমতি ছাড়া কাটা হল ওই পাট্টার জমি?

Advertisement

স্থানীয় ভেমুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান গজমোহন মান্না বলেন, “আমি অসুস্থতার জন্য দীর্ঘদিন অফিসে যাইনি। বিষয়টি জানা ছিল না। তবে যাঁরা কেটেছে তাঁরা আমায় বলছে, ওটা জমি নয়, পুকুরই ছিল।” ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পরে কংগ্রেস পঞ্চায়েত সমিতিই বা কেন ব্যবস্থা নিল না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যদিও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল পাণ্ডা বলেন, “ঘটনাটি সঠিকভাবে জানতে আমি কয়েকদিনের মধ্যেই কর্মীদের এলাকায় পাঠাব।” আর মানসবাবুর বক্তব্য, “সুদামবাবু গত জুন মাস থেকে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু জেলা প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সুদামবাবু কংগ্রেস সমর্থক। এটাই কি তাঁর অপরাধ? আমি রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে তদন্তের দাবি জানিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন