বাসমালিক ও আইএনটিটিইউসি-র বাসকর্মী সংগঠনের একাংশের বিরোধে বন্ধ হল বাস চলাচল। এর জেরে রবিবার সকাল থেকেই ডেবরা-টাবাগেড়িয়া রুটের ২৬টি বাস চলেনি। দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। বাসকর্মী সংগঠনের অভিযোগ, মালিকপক্ষ একাংশ শ্রমিককে ন্যায্য মজুরি দিচ্ছে না, বরং সংগঠনেরই একটি অংশকে প্রাপ্য মজুরি দিয়ে সংগঠনে ভাঙন ধরাচ্ছে। এ দিন ঐক্যবব্ধ হওয়ার ডাক দিয়ে গৌরাঙ্গচকে বিক্ষোভ মিছিল করেন শ্রমিকেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর, বেলপাহাড়ি, বালিচক থেকে ডেবরা হয়ে সত্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের টাবাগেড়িয়া পর্যন্ত ২৬টি বাস যাতায়াত করে। অধিকাংশ বাসকর্মীরা আইএনটিটিইউসি-র টাবাগেড়িয়া শাখার অধীনে এলেও ৫টি বাসের শ্রমিকেরা টাবাগেড়িয়া শাখায় আসেননি। তাঁরা আইএনটিটিইউসি-র বালিচক শাখার সদস্য রয়েছেন। অভিযোগ, তাতে ক্ষুদ্ধ টাবাগেড়িয়া শাখার সদস্যেরা। মালিকপক্ষের অভিযোগ, ওই ৫টি বাসের কর্মীদের রুট থেকে ছাঁটাই করে নতুন কর্মী নিয়োগে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে আইএনটিটিইউসি-র টাবাগেড়িয়া শাখা নেতৃত্ব।
টাবাগেড়িয়া বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দক্ষিণারঞ্জন মাইতি বলেন, “ওঁদের (তৃণমূল) বাসকর্মী সংগঠনের অন্দরে দ্বন্দ্ব চলছে। তাই ৫টি বাসের ২০ বছর ধরে কাজ করা কর্মীদের ছাঁটাই করে ওঁদের মনোনীত কর্মী নিয়োগে চাপ দিচ্ছে। কিন্তু তা সম্ভব নয়। তাই ওঁরা ৫টি বাস বন্ধ করে দেওয়ায় আমরাও বাকি সব বাস বন্ধ করেছি।”
এ দিকে, আইএনটিটিইউসির দাবি, মালিকপক্ষ সংগঠনে ভাঙন ধরাতে চাইছেন। তাই সংগঠনের আন্দোলনের পরে ৮০ শতাংশ শ্রমিকের মজুরি দিয়ে, বাকিদের মজুরি কম দিচ্ছে ৫টি বাসের মালিকেরা। এ দিনের আন্দোলনে নেতৃত্ব থাকা আইএনটিটিইউসি-র সত্যপুর অঞ্চলের সভাপতি পিয়ার আলমের অভিযোগ, মালিকপক্ষ ৫টি বাসের কর্মীদের কম মজুরি দেওয়ায় তাঁরা ওই কর্মীদের কাছে জবাব দিতে পারছেন না। তাই শ্রমিকদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। মালিকপক্ষের কাছে তাঁরা সকলকে সমান মজুরির দাবি জানানোয় মালিকেরাই ২৬টি বাস বন্ধ করে দিয়েছে। দক্ষিণারঞ্জনবাবু অবশ্য ন্যায্য মজুরি না দেওয়ার বিষয়টি মানেননি।
এ দিন সংগঠনে ভাঙন ধরানো যাবে না বলে আইএনটিটিইউসি-র পক্ষ থেকে মিছিল বের হয় ওই এলাকায়। তবে বিকেল পর্যন্ত বাস চলেনি। ডেবরার আইএনটিটিইউসি সভাপতি রতন দে বলেন, “একাংশ শ্রমিক সংগঠনে থেকেও মালিকদের চাপে টাবাগেড়িয়া শাখায় যুক্ত হতে পারছেন না। ফলে ওই শাখার শ্রমিকদের ক্ষোভ বাড়ছে। তা ছাড়া আমরা মালিকদের বললেও তাঁরা শ্রমিকদের একছাতার তলায় আনছে না।” তাঁর কথায়, এ ভাবে মালিকদের বাস বন্ধ করা ঠিক হয়নি। প্রয়োজনে পুলিশি ব্যবস্থায় বাস চালানোর দাবি করেন আইএনটিটিইউসির ওই নেতা।