প্রচারে মিঠুন চক্রবর্তী। —ফাইল ছবি।
তিন প্রার্থীর মধ্যে দু’জনই তারকা। একজন প্রবীন হলে কী হবে, অন্য জন একেবারেই নবীন। তবু তাঁদের প্রচারে আনতে হচ্ছে অন্য তারকাদের। আগে এসেছিলেন হিরণ। এ বার আসছেন মিঠুন চক্রবর্তী!
আজ, মঙ্গলবার জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্রেই মিঠুনের তিনটি সভা করার কথা। প্রথমটি হবে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গোপীবল্লভপুরে ছাতিনাশোলে, দ্বিতীয় সভাটি হওয়ার কথা খড়্গপুরে, আর তৃতীয় সভাটি হবে দাসপুরের সোনাখালিতে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর ১২টা নাগাদ প্রথম সভাটি শুরু হওয়ার কথা। দাসপুরের সভাটি হবে চারটে নাগাদ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “উনি এ দিন তিনটি সভায় থাকবেন। তিন প্রার্থীর হয়েই প্রচার করবেন।”
মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সন্ধ্যায় রায় নিজেই তারকা। তবু তাঁর কেন্দ্রে বারেবারেই প্রচারে আসতে হয়েছে অন্য তারকাদেরও। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেশিয়াড়ি ও বেলদাতে তাঁর সমর্থনে সভা করেছেন। সঙ্গে ছিলেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তারকা প্রার্থী দেবও। শনিবার এনায়েতপুরে এসেছিলেন হিরণ। ছিলেন দেব। দুই তারকাকে নিয়ে সভা করেন। এই দুই তারকা আবার ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী উমা সোরেনের কেন্দ্রেও প্রচারে যান। দেব নিজের কেন্দ্র ছেড়ে অন্যদের কেন্দ্রে তো যাচ্ছেনই, এ বার তাঁর কেন্দ্রেও প্রচারে আসছেন অন্য তারকা। তিনি বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের নক্ষত্র মিঠুন চক্রবর্তী।
এ বারের নির্বাচনে বারেবারেই তারকারা ভিড় করেছেন প্রচারে। শুধু তারকা নন, মুখ্যমন্ত্রীও জেলায় একাধিক সভা করেছেন। তারই সঙ্গে সভা করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ও। এমনকি আগামী শুক্রবার মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহরে ফের মুখ্যমন্ত্রীর জেলায় আসার কথা রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন তারকাদের উপরেই ভরসা রাখছে তৃণমূল? তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, “প্রচারে তারকারা এলে সভাতে ভিড় হচ্ছে চোখে পড়ার মতো। না হলে যত বড় নেতা-নেত্রীই আসুন না কেন এই ভীষণ দাবদাহে মানুষকে সভায় নিয়ে আসা একেবারেই অসম্ভব। শুধু তো নিয়ে আসা নয়, দীর্ঘক্ষণ চড়া রোদ মাথায় নিয়ে বক্তব্য শোনা। কে শুনবে। তাই তারকার উপরেই ভরসা।”
কিন্তু তারকাদের যাঁরা দেখতে আসেন তাঁরা যে সকলেই দলীয় সমর্থক তা তো নাও হতে পারে। এর থেকে তো সহজে বোঝা মুস্কিল সত্যিই সমাবেশে আসা লোকজন দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেবে কি না! তৃণমূল নেতৃত্বের কথায়, ভিড় হওয়াই বড় কথা। কারণ, তাতে অন্য দলের কট্টর সমর্থকেরা থাকবেন না। কিছু উৎসাহী যুবক বা কোনও দলের কট্টর সমর্থক নন তাঁরাই আসবেন। আসার পর দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য শোনার ফলে কিছুটা হলেও তো তাঁদের বোঝানো সম্ভব হবে। যার ফলে সহজে সেই ভোট অন্য দলের প্রার্থী পাবেন না। তা ছাড়াও শাসকদলের সভায় বেশি মানুষের জমায়েত না হলে সাধারণ ভোটারের মধ্যে সহজেই বিরূপ প্রভাব পড়বে। যার ফায়দা তুলবে বিরোধীরা।
এত সব চিন্তাভাবনা থেকেই তারকাদের দিয়ে সভা করানোর সিদ্ধান্ত বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন অবশ্য মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে দলের কোনও বড় নেতার থাকার কথা নেই। এমনকি দেবও থাকবেন না বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। জেলা নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়েই সভা করবেন মিঠুন।