নব নির্বাচিত দলীয় সাংসদ সন্ধ্যা রায় প্রথম বার রেলশহরে এলেও চাপা থাকল না তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। রবিবার সন্ধ্যায় খড়্গপুরের টাউনহলে তৃণমূল সমর্থিত রেলের হকার-ভেন্ডার ও কর্মচারীদের নিয়ে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ প্রমুখ। সভায় খড়্গপুর পুরসভার বেশ কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলরও উপস্থিত ছিলেন। যদিও বাকি তৃণমূল কাউন্সিলরদের অভিযোগ, আলোচনাসভার বিষয়ে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি।
আলোচনাসভায় উপস্থিত তৃণমূলের ন’জন কাউন্সিলর শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস পালের অনুগামী বলে পরিচিত। অভিযোগ, দলের জেলা কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান জওহরলাল পালের অনুগামী কাউন্সিলরদের ওই সভার বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে খড়্গপুরে তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছিল। বিজেপি খড়্গপুরে প্রথম স্থানে ছিল। ভোটে খারাপ ফলের পরও যে রেলশহরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দে ছেদ পড়েনি, এ দিনের ঘটনায় ফের তা ইঙ্গিত মিলল। এ বিষয়ে শহর তৃণমূল সভাপতির কাছে জানতে চাওয়া হলে দেবাশিসবাবু বলেন, “এটা কোনও দলীয় অনুষ্ঠান ছিল না। শুধুমাত্র সাংসদের সঙ্গে রেলের সমস্যা নিয়ে একটা আলোচনা ছিল। তাই কী কারণে, কাদের ডাকা হয়নি, এ নিয়ে মন্তব্য করব্য না।” মৃগেনবাবুও বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।” তৃণমূল কাউন্সিলর মহম্মদ আকবর, প্রাক্তন পুরপ্রধানের বৌমা তৃণমূল কাউন্সিলর জয়া পাল বলেন, “আমরা জানিই না কী অনুষ্ঠান ছিল। আর আমাদের কোনও চিঠিও দেওয়া হয়নি।”
রেলশহরের নানা সমস্যা সম্পর্কে জানতেই এ দিনের আলোচনাসভার আয়োজন হয়। সম্প্রতি রেলের ভেন্ডারদের আরপিএফ দিয়ে স্টেশনের বাইরে বের করে দেওয়া, হকারদের উচ্ছেদ করার নোটিস, রেলের কোয়ার্টারগুলির বেহাল দশা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়। জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “বিজেপির সরকার কেন্দ্রে এলেও রেলের এই সমস্যা মেটানোর কথা বলছে না। তাই হকার-ভেন্ডার ও রেল কর্মীদের এক জোট হয়ে লড়াই করতে হবে।” তৃণমূল সাংসদ সন্ধ্যা রায় বলেন, “এই শহরের কথা শুনে যেটুকু বুঝছি, সমস্যাগুলি দীর্ঘদিনের। সেগুলি সমাধানের উদ্যোগ নেই। তাই এই সমস্যাগুলি নথিভুক্ত করে আমি দিল্লির দরবারে যাব। প্রয়োজনে রেল মন্ত্রীকে লিখিতভাবে বিষয়গুলি জানিয়ে সমস্যার সমাধানে আলোচনা করব।”