এ বার ভেষজ আবির তৈরি হল বিদ্যাসাগরেও

দীর্ঘ গবেষণার পর ফুলের পাপড়ি থেকে আবির তৈরি করে খবরে এসেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এ বার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা ও বনবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে প্রাকৃতিক নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি করল প্রাকৃতিক আবির।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৪ ০২:০২
Share:

গবেষণাগারে শিক্ষক অমল মণ্ডলের সঙ্গে পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘ গবেষণার পর ফুলের পাপড়ি থেকে আবির তৈরি করে খবরে এসেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এ বার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা ও বনবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে প্রাকৃতিক নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি করল প্রাকৃতিক আবির।

Advertisement

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২০১২ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের অধ্যাপক অমল কুমার মণ্ডলের নেতৃত্বে প্ল্যান্ট ট্যাক্সোনমি বায়োসিস্টেমেটিক্স এবং মলিকিউলার টেক্সোনমি গবেষণাগারে একটি দল প্রাকৃতিক রঙ বা আবির তৈরির কাজ শুরু করে। গবেষণা করে জানা যায়, এমন প্রায় ৪০টি গাছ রয়েছে, যার কাণ্ড, শিকড়, ছাল, বীজ, পাতা থেকে প্রাকৃতিক আবির তৈরি করা সম্ভব। ওই গবেষক দলের পক্ষে পীযূষকান্তি দাস জানান, ওল গাছের মূলের ছাল সংগ্রহ করে তা শুকিয়ে গুঁড়ো করে লালচে খয়েরি রঙের আবির তৈরি হয়। মহুয়া গাছের কাণ্ডের ছাল সংগ্রহ করে একই পদ্ধতিতে লালচে বাদামি রঙের আবির হয়। অন্য দিকে সেগুন গাছের সদ্য কচি পাতা থেকে লালচে মেরুন জাতীয় ভেষজ রঙ তৈরি হয়। রক্তপিতা গাছের ছাল থেকে লাল রঙের আবির তৈরি হয়। অর্জুন গাছের কাণ্ডের ছাল থেকে একই পদ্ধতিতে বাদামি রঙের আবির তৈরি হয়। পলাশ গাছের ফুল এবং সিন্দুরে গাছের ফলের বীজ সংগ্রহ করে হলুদ ও কমলা রঙের আবির তৈরি হয়। প্রাকৃতিক নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি করা এই আবিরের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কি না তা জানার জন্য কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের জৈব রসায়ন ল্যাবরেটরিতে তার পরীক্ষাও করা হয়। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় সেই আবির। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের গবেষক তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমলকুমার মণ্ডল বলেন, “কাঁচামালের কোনও অভাব নেই। এই আবির তৈরি করতে খরচও অনেক কম। আর এই আবির দিয়ে নির্ভয়ে সকলেই দোলের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন।”

তবে পরিকাঠামো ও প্রচারের অভাবে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এখনও এই আবিরকে বাজারে আনতে পারেনি। অমলবাবু বলেন, “পরিকাঠামোগত সমস্যার ফলে আমরা এখনও এই আবিরকে বাজারজাত করতে পারিনি। আমরা ঠিক করেছি প্রাথমিকভাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের কর্মীদের দিয়ে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন আবির তৈরি করব। কোনও ব্যাক্তি ব্যবসায়িক কারণে যোগাযোগ করেন, তাঁকে আমরা শর্তসাপেক্ষে সবরকম ভাবেই সাহায্য করব।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন