কেশপুরে সভা, মুকুলের নিশানায় বিজেপি

রাজ্যে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধিতে যে তাঁরা উদ্বিগ্ন, পরোক্ষে তা বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দাবি করলেন, বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকবেই, কুৎসা-অপপ্রচার করে এটা নষ্ট করা যাবে না। প্রশ্ন তুললেন, কেশপুরের লড়াইয়ের সময়ে, জঙ্গলমহলের লড়াইয়ের সময়ে কোথায় ছিল বিজেপি? পরিবর্তীত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কেশপুরের মানুষকে তাই অতীত স্মরণ করারই পরামর্শ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেশপুর শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৩৭
Share:

সভামঞ্চে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূল সাংসদ। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

রাজ্যে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধিতে যে তাঁরা উদ্বিগ্ন, পরোক্ষে তা বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দাবি করলেন, বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকবেই, কুৎসা-অপপ্রচার করে এটা নষ্ট করা যাবে না। প্রশ্ন তুললেন, কেশপুরের লড়াইয়ের সময়ে, জঙ্গলমহলের লড়াইয়ের সময়ে কোথায় ছিল বিজেপি? পরিবর্তীত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কেশপুরের মানুষকে তাই অতীত স্মরণ করারই পরামর্শ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়। তাঁর কথায়, “২০০৯ সাল পর্যন্ত কেশপুরে কোনও গণতন্ত্র ছিল না। ২০০৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমি এখানে এসেছিলাম। দলের ছেলেদের ডেকে বলেছিলাম, তোমরা প্রার্থী হও। মেদিনীপুর শহরে থাকবে। থাকা- খাওয়ার দায়িত্ব আমরা নেব। তবু একটা প্রার্থীও পাইনি!” মুকুলবাবুর মন্তব্য, “কেশপুরের মানুষ সেই ইতিহাসগুলো স্মরণ করুন।”

Advertisement

কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে এবং দলের বিরুদ্ধে চলা কুৎসা-অপপ্রচারের জবাব দিতেই বৃহস্পতিবার কেশপুরে এক জনসভার আয়োজন করে তৃণমূল। কেশপুর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে এই সভায় মুকুলবাবু ছাড়াও ছিলেন দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, দুই জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ এবং আশিস চক্রবর্তী, মহিলা তৃণমূল নেত্রী তথা জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ। এ দিন তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যের সিংহভাগ জুড়েই ছিল বিজেপি এবং একাংশ সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা। মুকুলবাবুর বক্তব্যেও এই দুই প্রসঙ্গ বারবার এসেছে। তাঁর দাবি, এ রাজ্যে বিজেপির কোনও জায়গা নেই, মানুষ তৃণমূলের পাশেই আছেন। অতীতের কথা টেনে মুকুলবাবু বলেন, “আমি অনেকবার কেশপুরে এসেছি। অন্তত একশোটা মানুষের দেহে ফুল-মালা দিয়েছি। কখনও শ্মশানে, কখনও কবরস্থানে গিয়েছি। তখন কোথায় ছিলেন আপনারা (বিজেপি)?”

মুকুলবাবু মনে করিয়ে দেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেশপুরে সভা করতে এসেছিলেন। একবার ৩০০টা বাস ভেঙে দেওয়া হয়েছিল! আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল! চার বছর আগেও মানুষ ভাবতে পারতেন না, এখানে আমরা সভা করবো। একবার এখানে এসে আমি গুলি খেয়ে মরে যাচ্ছিলাম! পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে টেনে নামিয়ে দিয়েছিলেন! এ সব ইতিহাস। বাংলায় যে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে, কেশপুরে যে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তা রক্ষা করতে হবে।” তৃণমূলের এই সর্বভারতীয় নেতার প্রশ্ন, “যাঁরা বলেন বাংলায় এখন গণতন্ত্র নেই, আজ তাঁরা বলুন বসিরহাটে বিজেপি জেতে কী করে?”

Advertisement

সারদায় তৃণমূলের কেউ জড়িত নন বলেও এদিন দাবি করেন মুকুলবাবু। তাঁর কথায়, “একটা সংস্থা ২০০৬ সালে গড়ে উঠল। আমরা ক্ষমতায় এলাম ২০১১ সালে। ২০১৩ সালে সংস্থাটি উঠে গেল। এমন ভাব দেখানো হচ্ছে যেন সব টাকা তৃণমূল চুরি করেছে! সিবিআই না কি গুরুঠাকুর। কাউকে ডাকলেই সে না কি চোর। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমি-সহ দলের কোনও ব্যক্তি যদি নিজের নামে বা দলকে ব্যবহার করে সারদার থেকে পয়সাকড়ি নিয়ে থাকে এবং সারদাকে বিশেষ সুযোগ দিয়ে থাকে তাহলে দল করাই ছেড়ে দেব!” মুকুলবাবুর মন্তব্য, “কখনও বলছে শুভেন্দু চোর, কখনও বলছে মুকুল রায় চোর, কখনও খোদ নেত্রীর দিকেই আঙুল তুলে দিচ্ছে। ভারতবর্ষে সৎ রাজনীতিক হিসেবে যদি দু’টো নাম উঠে আসে, তার একটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যাপারটা এত ঠুনকো নয়!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন