পাঁশকুড়ায় যাত্রীদের রেল অবরোধ
ট্রেন স্টেশনে ঢোকার ঠিক আগে বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা খেয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের কর্মী। সহযাত্রীরাই তাঁকে ধরাধরি করে মেচেদা স্টেশনে নামান।
কিন্তু কোনও সাহায্য মেলেনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, দীপঙ্কর দাস নামে বছর পঁয়ত্রিশের ওই যুবক বেশ কিছুক্ষণ স্টেশনে পড়ে থাকলেও রেলরক্ষী বাহিনী (আরপিএফ) বা রেলকর্মীরা গা করেননি। ওই যুবক যেখানে পড়ে ছিলেন, সেই ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম লাগোয়া লাইনে অবরোধ শুরু করেন কিছু যাত্রী। স্টেশনে পড়ে থেকেই মৃত্যু হয় আদতে হলদিয়ার সিটি সেন্টার এলাকার বাসিন্দা দীপঙ্করের। তার পরে সব লাইনই আটকে দেওয়া হয়।
পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদা স্টেশনে ওই অবরোধের জেরে দক্ষিণ পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর শাখায় রেল চলাচল দু’ঘণ্টারও বেশি থমকে থাকে। বিকেল পৌনে ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলা ওই অবরোধে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস, আপ রাঁচি-ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, আপ হাওড়া-দিঘা কাণ্ডারী এক্সপ্রেস, তিন জোড়া লোকাল ট্রেন আটকে পড়ে। নাকাল হন যাত্রীরা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুরের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, “জখম ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। সেই সময়েই অবরোধ শুরু হওয়ায় আমরা তাঁকে নিয়ে যেতে পারিনি। তখনই তাঁর মৃত্যু হয়।”
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ। কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরার জন্য দুপুরে হাওড়া স্টেশন থেকে হাওড়া-খড়্গপুর লোকাল ট্রেনে চেপেছিলেন দীপঙ্কর। ট্রেন মেচেদা স্টেশনে ঢোকার আগে দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী অনির্বাণ মাইতি, তপন নায়েকদের অভিযোগ, আহত দীপঙ্করকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামিয়ে সেখানে থাকা আরপিএফ এবং রেলের টিকিট পরীক্ষকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাঁরা কিছুই করেননি। কাছেই রেলের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। সেখানেও দীপঙ্করকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। পরে আরপিএফ এবং কয়েক জন রেলকর্মী যখন তাঁকে হাওড়ার উলুবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন, তত ক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
পরে অবরোধ সামাল দিতে মেচেদা আরপিএফ, পাঁশকুড়া জিআরপি ও কোলাঘাট থানার পুলিশ বাহিনী মেচেদা স্টেশনে আসে। কর্তব্যরত রেলকর্মীদের গাফিলতির অভিযোগ তুলে শাস্তি দাবি করেন অবরোধকারীরা। মেচেদা স্টেশন ম্যানেজার ও মেচেদা আরপিএফ থানার ওসি গাফিলতি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। রেল বিবেচনার আশ্বাস দিলে শেষে অবরোধ উঠে যায়।