খুনের কিনারা করল পুলিশ কুকুর

ধেড়ুয়ার খুনের ঘটনার কিনারা কত দিনের মধ্যে করা যাবে, গোড়ায় তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল পুলিশের একাংশের মধ্যেই। তবে পুলিশ কুকুর এনে তদন্ত শুরু করার ফলে গোড়াতেই কিনারা হয়ে গেল। ধরা পড়ে গেল অভিযুক্ত। উদ্ধার হল খুনে ব্যবহৃত কোদালও। কেন এই খুন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৪ ০১:০৫
Share:

ধেড়ুয়ার খুনের ঘটনার কিনারা কত দিনের মধ্যে করা যাবে, গোড়ায় তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল পুলিশের একাংশের মধ্যেই। তবে পুলিশ কুকুর এনে তদন্ত শুরু করার ফলে গোড়াতেই কিনারা হয়ে গেল। ধরা পড়ে গেল অভিযুক্ত। উদ্ধার হল খুনে ব্যবহৃত কোদালও। কেন এই খুন?

Advertisement

জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “তদন্তে একাধিক দিক উঠে এসেছে। আমরা সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখছি।” ধেড়ুয়ার ঘটনায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে মৃতের ভাইপোই। আর কী কেউ ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত? জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “তদন্তে আমরা এই দিকটিও খতিয়ে দেখছি।” রবিবার ধৃত তাপস পড়্যাকে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়েছিল। ধৃতের পুলিশ হেফাজত হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর কোতয়ালি থানার অন্তর্গত ধেড়ুয়ায় খুন হন ক্ষুদিরাম পড়্যা নামে বছর ষাটের এক বৃদ্ধ। ওই দিন বিকেলে নিজের জমিতে গিয়েছিলেন ক্ষুদিরাম। সন্ধ্যার পরও বাড়ি ফেরেননি দেখে তাঁর খোঁজ শুরু করেন পরিবারের লোকজন। পরে পরিবারের লোকেরা জমিতে গিয়ে দেখেন বৃদ্ধের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। মুণ্ডহীন দেহ। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। আশপাশে তল্লাশি চালিয়েও অবশ্য ওই দিন মুণ্ডর খোঁজ মেলেনি। শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে প্লাস্টিক বন্দি অবস্থায় পাওয়া যায় নিহতের মুণ্ডটি। প্লাস্টিকটি মাটির নীচে পোঁতা ছিল। উদ্ধার হয় একটি কোদালও। পুলিশের দাবি, এই কোদালই খুনে ব্যবহৃত হয়েছিল। পুলিশের এক সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তেই পুলিশ কর্তারা বুঝতে পারেন, ঘটনাটি পারিবারিক বিবাদের জেরে ঘটে থাকতে পারেন। পুলিশ কর্তারা এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, গ্রামবাসীদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক থাকলেও নিজের ভাই কাশীনাথের পরিবারের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল না ক্ষুদিরামের।

Advertisement

দুই পরিবারের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিবাদ ছিল। শনিবার দু’দফায় পুলিশ কুকুর এনে তদন্ত হয়। বিকেলের দিকে কয়েকজন গ্রামবাসীর সঙ্গে নিহতের ভাইপো তাপসকে এক সারিতে দাঁড় করানো হয়। তার আগে পুলিশ কুকুরকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে রক্তের গন্ধ শোকানো হয়। এরপর কুকুরটিকে যখন ওই সারির সামনে আনা হয়, তখন কুকুরটি তাপসকে দেখেই চিৎকার করতে থাকে। পরে পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়ে ওই যুবক। দোষ কবুল করে নেয় সে। কেন নিজের জ্যোঠুকে খুন করল তাপস? পুলিশের এক সূত্রে খবর, জেরায় এই যুবক জানিয়েছে, তাঁর বাবার (কাশীনাথ) শরীর বেশ কয়েকমাস ধরে ভাল যাচ্ছে না। বাবা রোগা হয়ে যাচ্ছেন। দিন কয়েক আগে সে এক গুণিনের কাজে গিয়েছিল। গুণিনের পরামর্শ মতোই জ্যেঠুকে খুন করেছে তাপস। কোদাল দিয়ে প্রথমে জ্যোঠুর মাথায় আঘাত করে সে। বৃদ্ধ জমিতে পড়ে যান। তখন কোদাল দিয়েই তাঁর গলায় কয়েকবার কোপ মারে সে। মুণ্ডটি আলাদা হয়ে যায়। ঘটনার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক পুলিশ অফিসার বলেন, “যুবকটির মধ্যে আক্রোশ বেশি ছিল। তার মধ্যে একটা ধারণা হয়েছিল যে, জ্যোঠুকে একেবারে শেষ করে দিতে হবে। সেই আক্রোশ থেকেই যুবকটি এমন ঘটনা ঘটায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন