ঘরছাড়াদের ফেরানোর প্রশ্নে ভরসা কমিশনই

লোকসভার আগে মানবিক কারণে এবং কর্মীদের মনোবল ফেরাতে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে চায় সিপিএম ও কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে এই দুই দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০১:০৫
Share:

লোকসভার আগে মানবিক কারণে এবং কর্মীদের মনোবল ফেরাতে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে চায় সিপিএম ও কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে এই দুই দল।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সিপিএমের ৭২০ জন ও কংগ্রেসের ২৭ জন কর্মী-সমর্থক তৃণমূলের অত্যাচারে দীর্ঘ দিন ঘরছাড়া বলে দলীয় সূত্রে অভিযোগ করা হয়েছে। কংগ্রেসের প্রদেশ সম্পাদক ক্ষিতিন্দ্রমোহন সাহুর অভিযোগ, জেলায় তাঁদের ২৭ জন কর্মী সমর্থক ঘরছাড়া। এর মধ্যে উত্তর কাঁথি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের দ্বারা ধর্ষিতা এক মহিলা কর্মীও রয়েছেন বলে তাঁর দাবি।

সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধান জানিয়েছেন, জেলায় তাঁদের ৭২০ জন নেতা ও কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া। শুধু নন্দীগ্রামেই সংখ্যাটা ৩৭৪। খেজুরিতে ১৪৬ জন, ভগবানপুরে ১৩১ জন, পটাশপুরে ২০ জন, উত্তর কাঁথিতে ৪৫ জন ও রামনগরে ৪ জন। ওই তালিকায় রয়েছেন, খেজুরি ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি হিমাংশু দাস, খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতির দুই প্রাক্তন সভাপতি দিপালী মণ্ড এবং প্রণব দাস, জোবেদ মল্লিক, প্রজাপতি দাস-সহ ১৪৬ জন।

Advertisement

২০১১ সালের রাজ্যে পরিবর্তনের পর হিমাংশু দাস, বিজন রায়, রবিউল হোসেন-সহ একাধিক সিপিএম নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে এঁরা আদালতের নির্দেশে জামিন পেলেও তৃণমূলের সন্ত্রাসে ঘরে ফিরতে পারছেন না বলে অভিযোগ সিপিএমের। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকে একাধিক বার উদ্যোগী হতে বলা হলেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে নেতৃত্বের অভিযোগ। দীর্ঘ দিন এই সব নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরতে না পারায় চাষবাস বন্ধ হয়ে রয়েছে। আবার কোথাও তৃণমূল কর্মীরা জোর করে এদের জমিতেই চাষবাস করে চলেছেন বলে প্রশান্তবাবুর অভিযোগ।

সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য নির্মল জানা বলেন, “লোকসভার আগেই এই সব নেতাকর্মীদের ঘরে ফিরাতে ইতিমধ্যেই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব কলকাতায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্তর কাছে দরবার করেছেন। কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটের আগে যাতে তাঁরা ঘরে ফিরতে পারেন, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, “জেলা কমিটির পক্ষ থেকেও কিছু দিনের মধ্যে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।”

অন্য দিকে, ঘরছাড়া কংগ্রেস কর্মীদেরও লোকসভার আগে ঘরে ফেরানোর জন্য কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে বলে কংগ্রেসের প্রদেশ সম্পাদক ক্ষিতিন্দ্রমোহন সাহু জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “উত্তর কাঁথিতে ১৮ জন, খেজুরিতে ৮ জন, পটাশপুরে এক জন মোট ২৭ জন কংগ্রেস কর্মী দীর্ঘ দিন ধরে গ্রামছাড়া। এঁদের মধ্যে উত্তর কাঁথি বিধানসভা কেন্দ্রের ছনবেড়িয়া গ্রামের এক মহিলা কংগ্রেস কর্মী তৃণমূল দুষ্কৃতীদের হাতে ধর্ষিতা হয়ে গ্রাম ছেড়েছেন।’’

দুই রাজনৈতিক দলের আশা, কমিশন উদ্যোগী হয়ে লোকসভার আগেই তাঁদের ঘরছাড়া কর্মীদের ঘরে ফিরিয়ে দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন