হয়রানির শিকার ট্রাক মালিকের দাদা আলমগীর। —নিজস্ব চিত্র।
এক সপ্তাহ হল খোওয়া গিয়েছে ভোজ্য তেল বোঝাই একটি ট্রাক। ঘটনাস্থল খড়্গপুর গ্রামীণ থানার অন্তর্গত ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। ঘটনার পর বেহুঁশ চালকের সংজ্ঞা ফেরে হুগলির ডানকুনিতে, রাস্তার ধারে। জখম অবস্থায় হাওড়ার ধুলাগড় থেকে ট্রাকের মালিককে উদ্ধার করে হাওড়া হাসপাতালে ভর্তি করে হাওড়া জেলা পুলিশ। ট্রাকটির অবশ্য হদিস মেলেনি। এ দিকে, খড়্গপুর গ্রামীণ থানা অভিযোগ নিতে চাইছে বলে জানিয়েছেন ট্রাক মালিকের দাদা। তাঁর অভিযোগ, বারবার বললেও পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছে না। ঘটনাটি কী?
ট্রাক চালকের বিবরণ অনুযায়ী, গত ১৯ জুন ঝাড়খণ্ডের বোকারো স্টিল সিটি এলাকার বাসিন্দা হায়দার আলি নিজের ট্রাক নিয়ে হলদিয়ায় এসেছিলেন। সিটি সেন্টারের কাছে ট্রাকে তেলের ড্রাম বোঝাই করে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছনোর কথা ছিল তাঁদের। ওই দিনই রওনা হন হায়দার এবং ট্রাক চালক পশুপতি তিওয়ারি। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে খড়্গপুরের দিকে আসছিল তেল বোঝাই ট্রাকটি। রাতে ডেবরা টোলপ্লাজা ছাড়িয়ে বুড়ামালার কাছে অন্য একটি ট্রাককে পাশ কাটিয়ে গাড়ি নিয়ে এগিয়ে যান পশুপতি। এর পরেই গোলমাল বাধে। পশুপতির কথায়, “অন্য ট্রাকটির লোকজন নেমে এসে আমাকে ও মালিককে মারধর করে। তখনই নাকে কী একটা দিয়ে দেয়। আমি জ্ঞান হারাই। জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি ডানকুনিতে রাস্তায় পড়ে আছি। ট্রাক বা মালিক কিছুই নেই।”
পরে খবর পেয়ে হায়দারের দাদা মহম্মদ আলমগীর কটক থেকে এ রাজ্যে আসেন। ডেবরা টোল প্লাজায় গিয়ে সিসিটিভি দেখে তিনি জানতে পারেন ট্রাকটি ওই টোলপ্লাজা পেরিয়েছিল। এর পর ডানকুনি পর্যন্ত সব থানায় যোগাযোগ করে আলমগীর জানেন, ধুলাগড় থানা এক অজ্ঞাতপরিচয়হী ব্যক্তিকে ২০ জুন হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। সেখানে গিয়েই ২২ জুন ভাই হায়দারের খোঁজ পান আলমগীর। পরে হায়দারকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এ দিন সকালে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার সামনে দাঁড়িয়ে আলমগীর বলেন, “আমি ২১ জুন কটকে গাড়ি ছেড়ে দিয়ে খড়্গপুরে ছুটে এসেছিলাম। ভাইকে পেয়েছি। ট্রাকটা পাচ্ছি না। পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছে না।”
গত পাঁচদিন ধরে থানার সামনে গাছতলাতেই তাই রয়েছেন আলমগীর। কিন্তু কেন নেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ? আলমগীর জানান, পুলিশ বলছে কোথায় ট্রাক ছিনতাই হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে, সেখানকার থানায় যেতে হবে। আলমগীর বলেন, “আমাদের ধারণা খড়্গপুর গ্রামীণ থানা এলাকাতেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবু ধুলাগড় থেকে খড়্গপুর লোকাল, সব থানায় গিয়েছি। কেউ অভিযোগ নেয়নি।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর এ দিন বলেন, “এমন ঘটনা হলে নিশ্চয়ই অভিযোগ নেওয়া হবে।”