সিপিএমের জেলা সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে না যাওয়ায় তৃণমূলের এক পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ উঠল। গত রবিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের এই ঘটনায় ওই তৃণমূল কর্মীর স্ত্রীকেও শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পাঁচ সিপিএম সমর্থকের বিরুদ্ধে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে চণ্ডীপুর থানায়। জখম ওই তৃণমূল কর্মী চিকিৎসাধীন রয়েছেন তমলুক জেলা হাসপাতালে। পূর্ব মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার অমিতভরত রাঠোর বলেন, “চণ্ডীপুরে এক দম্পতিকে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চণ্ডীপুর ব্লকের ব্রজলালচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওই বাসিন্দা পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক। আগে ওই ব্যক্তির পরিবার ফরওয়ার্ড ব্লকের সমর্থক ছিল। গত ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থীও হয়েছিলেন ওই ব্যক্তির স্ত্রী। কিন্তু সেখানে হেরে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেয় ওই পরিবার। ওই চিকিৎসকের অভিযোগ, দলবদল করার পর থেকেই ফের তাঁদের সিপিএমে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। গত রবিবার সিপিএমের জেলা সম্মেলনে যাওয়ার জন্য স্থানীয় সিপিএম সমর্থক কুশধ্বজ ঘোড়ই-সহ অনেকে তাঁদের জোর করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ঠিক কী ঘটেছিল রবিবার রাতে? হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, “রবিবার সমাবেশ থেকে ফিরে রাত ৯ টা নাগাদ কুশধ্বজ ঘোড়ই, রামপদ ঘোড়ই, শীতল ঘোড়ই-সহ একদল সিপিএম কর্মী-সমর্থক আমাদের বাড়িতে এসে হামলা চালায়। ওরা প্রথমে বাড়ির দরজায় লাথি মেরে হুমকি ঘর খুলতে বলে। আমি দরজা খুলতেই লাঠি দিয়ে আমাকে মারে।” পাশে তাঁর স্ত্রী বলেন, “স্বামীকে মারধরে বাধা দিতে গেলে আমার শ্লীলতাহানিও করে ওরা। বাড়িতে ঢুকে আমার ছেলেকেও মারধর করে।”
খবর পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা গিয়ে তিনজনকে উদ্ধার করে চণ্ডীপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। মাথায় ও চোখে আঘাত গুরুতর হওয়ায় রাতেই দেবকুমারবাবুকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সোমবার চণ্ডীপুর থানায় মারধর শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হয়। চণ্ডীপুরে তৃণমূল বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্য বলে, “ওই গ্রামে সিপিএমের সমর্থক বেশি। ওরা জোর করে ওই পরিবারকে হলদিয়ার সমাবেশে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। তাতে রাজি না হওয়াতেই এই আক্রমণ।” তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, “পারিবারিক জমির সীমানা নিয়ে বিরোধের একটি ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে আমাদের দলের সম্পর্ক নেই।”