তরুণীকে ধর্ষণের হুমকি, অভিযুক্ত সরকারি কর্মী

বিবাহিত এক তরুণীর বাড়িতে চড়াও হয়ে গালিগালাজ ও ফোনে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত অশোক পট্টনায়েক দেশপ্রাণ ব্লকের ভূমি রাজস্ব দফতরের আমিন। তিনি আবার তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কমর্চারী ফেডারেশনেরও অন্যতম সদস্য। ওই তরুণীর অভিযোগ, তাঁর বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বছর ঊনষাটের অশোকবাবুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১২
Share:

বিবাহিত এক তরুণীর বাড়িতে চড়াও হয়ে গালিগালাজ ও ফোনে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত অশোক পট্টনায়েক দেশপ্রাণ ব্লকের ভূমি রাজস্ব দফতরের আমিন। তিনি আবার তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কমর্চারী ফেডারেশনেরও অন্যতম সদস্য।

Advertisement

ওই তরুণীর অভিযোগ, তাঁর বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বছর ঊনষাটের অশোকবাবুর। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করাতেই ওই তরুণীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। গত ১১ নভেম্বর অশোকবাবুর বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তরুণী। আর তারপর থেকেই এলাকাছাড়া অভিযুক্ত। এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “ওই ব্যক্তি পলাতক। অভিযোগ খতিয়ে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ সূত্রে খবর, অশোকবাবুর বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য, ধর্ষণের হুমকি-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।

কাঁথি শহরের কিশোরনগরের বাসিন্দা অশোকবাবু বিবাহিত। তাঁর একটি ছেলে রয়েছে। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকে। সরকারি কর্মী হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত প্রবীণ এই মানুষটি। এক সময় তিনি তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কমর্চারী ফেডারেশনের কাঁথি মহকুমা কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে অবশ্য সাধারণ সদস্য। একইসঙ্গে কাঁথি মহকুমা রেফারি ও আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পদেও রয়েছেন অশোকবাবু। তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ফেডারেশনের জেলা কমিটির সদস্য অর্ধেন্দু মহাপাত্র বলেন, “অশোকবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা শুনেছি। উনি আগে সংগঠনের কর্মকর্তা ছিলেন।”

Advertisement

অভিযোগকারিণী তরুণীর স্বামীও কর্মসূত্রে ভিন্ রাজ্যে থাকেন। কাঁথি শহরে চার বছরের মেয়েকে নিয়ে একাই থাকেন ওই মহিলা। মেয়েকে দেখাশোনার জন্য বাড়িতে একজন পরিচারিকাও রয়েছে। কাঁথি শহরে তাঁর একটি ‘করেসপন্ডেন্ট’ কলেজ রয়েছে। আগে ওই কলেজেই কাজ করতেন অভিযোগকারিণী। সেই থেকেই অশোক পট্টনায়েকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। চাকরির সূত্রেই ওই মহিলার বাড়িতেও যাতায়াত ছিল তাঁর। সেই থেকেই মহিলার স্বামীর সঙ্গেও তাঁর পরিচয় হয়। পরবর্তীকালে ওই চাকরি ছেড়ে দিয়ে অভিযোগকারিণী অন্য একটি কলেজের চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু তারপরেও ওই মহিলার বাড়িতে অভিযুক্তের যাতায়াত অব্যাহতই ছিল।

ওই মহিলার অভিযোগ, “অশোকবাবুর কলেজে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরও আমার অনুপস্থিতিতে উনি প্রায়ই বাড়িতে এসে ওই পরিচারিকার সঙ্গে অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকতেন। বিষয়টি স্বামীকেও জানাই। এরপরই অশোকবাবুকে বাড়িতে আসতে নিষেধ করি।” তাঁর আরও অভিযোগ, “ওই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৫ নভেম্বর অশোকবাবু একাধিকবার আমাকে ফোন করে অশ্লীল গালিগালাজ ও কুরুচিকর মন্তব্য করেন। আমাকে ধর্ষণ করে কাঁথি ছাড়া করারও হুমকি দেন তিনি।”

অভিযোগ, গত ১০ নভেম্বর গভীর রাতে অশোক পট্টনায়েক ওই মহিলার বাড়ির গেটে ধাক্কা মারতে থাকেন। অশালীন মন্তব্যও করেন তিনি। ওই মহিলার কথায়, “আমার ও আমার ছোট মেয়ের সম্মানের কথা ভেবেই পুলিশ অভিযোগ দায়ের করি।” ওই পরিচারিকা অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অভিযোগকারিনীর বক্তব্য, “ওই পরিচারিকা নিজের অন্যায়ের কথা স্বীকার করে আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছে। তাই ওই ঘটনার পরও ওকে কাজে রেখেছি।” গত ২৩ নভেম্বর কাঁথি থানার পক্ষ থেকে এফআইআরের কপি কাঁথি এসিজেএম আদালতে পাঠানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন