আক্রান্ত তৃণমূল নেত্রী, প্রশ্নের মুখে রেলশহরের নিরাপত্তা

দীপাবলির রাতে শ্লীলতাহানির নালিশ

কালীপুজোর রাতে রেলশহর খড়্গপুরে শাসকদলের এক নেত্রী ও তাঁর বোনের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। বাড়ির সামনের রাস্তায় তুবড়ি জ্বালাতে গিয়ে এমন ঘটনা ফের এলাকার নিরাপত্তাকে বেআব্রু করল। বহু ভাষাভাষির এই শহরে কালীপুজোর রাতে বৃহস্পতিবার ছিল উত্‌সবের মেজাজ। নিজের বাপের বাড়ির সামনে নিজেদের মতো করে উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন ওই তৃণমূল নেত্রী। পরিবারের আরও অনেকের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বিবাহিত বছর একুশের বোনও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০০
Share:

কালীপুজোর রাতে রেলশহর খড়্গপুরে শাসকদলের এক নেত্রী ও তাঁর বোনের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। বাড়ির সামনের রাস্তায় তুবড়ি জ্বালাতে গিয়ে এমন ঘটনা ফের এলাকার নিরাপত্তাকে বেআব্রু করল।

Advertisement

বহু ভাষাভাষির এই শহরে কালীপুজোর রাতে বৃহস্পতিবার ছিল উত্‌সবের মেজাজ। নিজের বাপের বাড়ির সামনে নিজেদের মতো করে উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন ওই তৃণমূল নেত্রী। পরিবারের আরও অনেকের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বিবাহিত বছর একুশের বোনও। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ির সামনের রাস্তায় একটি তুবড়ি জ্বালাতে যান তাঁরা। সেই সময় চার-পাঁচ জন যুবক দু’টি মোটর বাইকে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তুবড়িটি পা দিয়ে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ।

এমন ব্যবহারের প্রতিবাদ জানান ওই নেত্রী। তাঁর অভিযোগ, তখন হঠাত্‌ই তারা গালমন্দ, কটূক্তি করতে থাকে। এরপরই ঠেলে ফেলে দেয়। বাধা দিতে গেলে তাঁর বোনকেও ঠেলে ফেলে দেয়। তাঁদের শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করে। আশেপাশের লোকেরা বেরিয়ে এলে ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্তেরা। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে বিষয়টি জানান তিনি।

Advertisement

অভিযোগ, রেশ কাটার আগেই ফের ওই যুবকেরা আধ ঘণ্টার মধ্যে আরও বেশি সংখ্যায় ফিরে এসে নেত্রীকে মারধর করে। স্থানীয়েরা পাল্টা প্রতিরোধ করলে পালায় তারা। এরপরেই ফের পুলিশকে জানান ওই নেত্রী। থানায় গিয়ে শেখ কুরবান ও শেখ বকার-সহ আট জনের নামে অভিযোগ দায়েরও করেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্ত শেখ কুরবান এলাকায় টাইলসের মিস্ত্রি বলে পরিচিত। শেখ বকার দোকানে কাজ করে। অভিযোগকারিনী বলেন, “এরা এলাকায় কুকর্ম করে বলে জানি।”

রেলশহরে একের পর এক ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। গত সোমবার রাতে স্টেশন সংলগ্ন ৭ নম্বর রেল কলোনি এলাকায় এক সোনা দোকানের কর্মীর ব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টায় গুলি চলেছিল। তার দু’দিন পরে বুধবার ইন্দায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের সামনে আইআইটি-র অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই হয়। দুর্গাপুজোর আগে থানার অদূরে ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই, দুর্গাপুজোয় ভগবানপুরে যুবকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।

এরপর কালীপুজোর রাতে তৃণমূল নেত্রীর শ্লীলতাহানি আরও একবার শহরের নিরাপত্তাকেই বেআব্রু করল। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর অবশ্য দাবি করেন, “এলাকায় যথেষ্ঠ পুলিশি নজরদারি রয়েছে। তার মধ্যে কিছু ঘটনা ঘটছে ঠিকই। কিন্তু, বাড়ছে বলাটা ভুল হবে।” শ্লীলতাহানির ঘটনাটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লক্ষ্মী থাপা বলেন, “ওদের হামলা দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পরে অনেকে মিলে পরিস্থিতি সামলাই। পুলিশও আসে।”

তবে সকলেই মানছেন, প্রথমবার অভিযোগ করার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এলে হয়তো পরের ঘটনাটি এড়ানো যেত! তাঁরা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন