শেখ খলিলুদ্দিন। —নিজস্ব চিত্র।
নেতাই-কাণ্ডের অভিযুক্ত সিপিএমের বিনপুর জোনাল সদস্য খলিলুদ্দিনকে এবার এক বছরের পুরনো একটি অস্ত্র-মামলায় যুক্ত করল পুলিশ। নেতাই-কাণ্ডের অভিযুক্ত খলিলুদ্দিনকে গত ২৮ এপ্রিল হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। অভিযুক্ত জেল হেফাজতে ছিলেন। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত নেতাকে অস্ত্র মামলাটিতে যুক্ত করার নির্দেশ দেন বিচারক। এ দিন খলিলুদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতের সরকারি কৌঁসুলি কণিষ্ক বসু বলেন, “২০১৩ সালের ১৩ এপ্রিল লালগড় থানার নেড়া গ্রামে খলিলুদ্দিনের চাষজমিতে পোঁতা থাকা বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ওই মামলার নয় জন অভিযুক্তের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত হলেন খলিলুদ্দিন। ওই মামলায় খলিলুদ্দিনকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।” তবে এ দিন অবশ্য অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে কোনও আবেদন করে নি পুলিশ। বিচারক কৃষ্ণমুরারিপ্রসাদ গুপ্ত অস্ত্র মামলাটিতে খলিলুদ্দিনকে চোদ্দদিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রের খবর, গত বছর ১৩ এপ্রিল লালগড়ের নেড়া গ্রামে খালপাড়ের ধারে পোঁতা থাকা দশটি বন্দুক-রাইফেল উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, খালপাড়ের যেখানে বন্দুক-রাইফেলগুলি পোঁতা ছিল, সেই জমিটি সিপিএমের বিনপুর জোনাল কমিটির সদস্য শেখ খলিলউদ্দিনের চাষ-জমি। ওই ঘটনায় স্থানীয় গ্রামবাসী শেখ জাকিরুদ্দিনের অভিযোগের ভিত্তিতে খলিলুদ্দিন-সহ সিপিএমের স্থানীয় নয় নেতা-কর্মীর নামে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করেছিল লালগড় থানার পুলিশ। ঘটনার সময় খলিলুদ্দিন ফেরার ছিলেন। তবে বাকি ৮ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ওই ৮ জনই এখন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। নেতাই-কাণ্ডের ফেরার আট অভিযুক্তদের মধ্যে খলিলুদ্দিন-সহ সাত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। সাতজনই এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। নেতাই মামলাটির বিচার চলছে মেদিনীপুরের বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে। আগামী ২৬ মে থেকে ওই আদালতে নেতাই মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে রথীন দণ্ডপাটের বাড়িতে থাকা সিপিএমের সশস্ত্র শিবির থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। প্রথমে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। কিন্তু ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিআইডির হাত থেকে নেতাই-মামলার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইকে দেওয়া হয়। সিবিআই ১২জন সিপিএম নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে। গত ২৮ এপ্রিল অভিযুক্ত পাঁচ সিপিএম নেতা-কর্মীকে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ৬ মে নেতাই-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সিপিএমের বিনপুর জোনাল সম্পাদক অনুজ পাণ্ডেকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ৮ মে হুগলির চণ্ডীতলা থানার একটি স্কুল চত্বর থেকে চণ্ডী করণকে ধরা হয়।