নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এসএফআইয়ের মিছিল

শিক্ষাক্ষেত্রে সন্ত্রাস-অরাজকতার অবসান ঘটিয়ে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে মেদিনীপুরে জমায়েত করল এসএফআই। মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলের সামনে থেকে সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল শুরু করেন। পরে ওই মিছিল পৌঁছয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সভা হয়। নেতৃত্বে ছিলেন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা, জেলা সভাপতি সোমনাথ চন্দ প্রমুখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৫ ০০:৪৯
Share:

মেদিনীপুরে ছাত্র সংগঠনের মিছিল। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

শিক্ষাক্ষেত্রে সন্ত্রাস-অরাজকতার অবসান ঘটিয়ে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে মেদিনীপুরে জমায়েত করল এসএফআই। মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলের সামনে থেকে সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল শুরু করেন। পরে ওই মিছিল পৌঁছয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সভা হয়। নেতৃত্বে ছিলেন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা, জেলা সভাপতি সোমনাথ চন্দ প্রমুখ। সৌগতর দাবি, ‘‘বর্তমানে এক সর্বাত্মক আক্রমণের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছাত্রসমাজ। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাসে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এই সময়ে শুধু প্রতিবাদ করলে হবে না। প্রতিরোধে সামিল হতে হবে। ছাত্রছাত্রীরাও পারে প্রতিরোধ করতে।’’ তাঁর কথায়, “পরিস্থিতির পরিবর্তন করা একা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। সবাই মিলে করতে হবে। ছাত্রছাত্রীরা মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। আমরাও সর্বত্র ছাত্রছাত্রীদের কাছে যাচ্ছি।’’
এ দিন সকাল থেকেই আকাশের মুখ ছিল ভার। মাঝেমেধ্যে বৃষ্টি হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের এই কর্মসূচি হয়। দলীয় সূত্রে খবর, সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের আন্দোলনে রাখতেই ‘বিশ্ববিদ্যালয় চলো’র ডাক দিয়েছিল এসএফআই। বেশ কয়েক মাস পরে এসএফআই মেদিনীপুর শহরে কেন্দ্রীয় মিছিল করল। নেতৃত্বের দাবি, দুর্যোগের মধ্যেও প্রত্যাশিত জমায়েত হয়েছিল। অবশ্য শাসক দলের ছাত্র সংগঠন এই কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ। টিএমসিপির জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির দাবি, এসএফআই-সহ বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর অস্তিত্ব ক্ষীণ হচ্ছে। জেলায় ছাত্রভোটের ফলেও তা স্পষ্ট।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমরাও আরও বেশি করে ছাত্রছাত্রীদের কাছে যাচ্ছি। গত চার বছরে কী কী হয়েছে, তা ছাত্রছাত্রীদের জানাচ্ছি।”

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুর একটা নাগাদ শহরের বিদ্যাসাগর হলের সামনে থেকে এসএফআইয়ের মিছিল শুরু হয়। সংগঠনের বিভিন্ন কলেজ ইউনিটের কর্মী-সমর্থকেরা যোগ দেন। মিছিলের সামনের ভাগে ছিলেন ছাত্রীরাই। ঠিক কি কি দাবিতে এই কর্মসূচি? নেতৃত্বের বক্তব্য, সব মিলিয়ে ১২ দফা দাবিতে ‘বিশ্ববিদ্যালয় চলো’র ডাক দেওয়া হয়েছিল। সর্বস্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে যোগ্যতাকেই একমাত্র মাপকাঠি করা, অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সুনিশ্চিত করা, বিএডে কোনও মতেই অনৈতিক ফি বৃদ্ধি না করা, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করা, সরকারি বিএড কলেজের সংখ্যা বাড়ানো, স্নাতকোত্তরস্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় পরীক্ষা ও কাউন্সেলিং পদ্ধতি বাতিল না করা, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা ধারাবাহিক করা, পিছিয়ে পড়া দুর্বল অংশের ছাত্রছাত্রীদের ফি ছাড় দেওয়া, সমস্ত শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ-নিয়মিত ক্লাস চালু রাখার মতো কয়েকটি দাবিকে সামনে রেখেই এই কর্মসূচি। সৌগত বলেন, ‘‘আমরা চাই, এই সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হোক। বিতর্ক হোক। প্রতিটি ক্যাম্পাসে, বেঞ্চে বেঞ্চে আলোচনার একটা ঝড় উঠুক। ছাত্রছাত্রীদের ওপর সর্বগ্রাসী নীতিগুলোর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র আন্দোলনই চাই।” তাঁর কথায়, “উচ্চশিক্ষায় ব্যয় বরাদ্দ ধারাবাহিক ভাবে কমছে। গরিব ছাত্রছাত্রীদের কাছে শিক্ষার সুযোগ সঙ্কুচিত হচ্ছে। ক্যাম্পাসে ভয়ঙ্কর নৈরাজ্যের পরিবেশ। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থেই পরিস্থিতির পরিবর্তন দরকার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন