নরক নিকাশি

পর্যটন শহর ঝাড়গ্রামের নিকাশির স্বাস্থ্য ফেরেনি। বাম আমলে পরিল্পনাবিহীন ভাবে কিছু নর্দমা তৈরি হয়েছিল। ২০১৩-র ডিসেম্বরে পুরবোর্ডের ক্ষমতায় তৃণমূল আসার পরেও ছবিটা কিন্তু তেমন বদলায়নি।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:১৩
Share:

২ নম্বর ওয়ার্ড: বাছুরডোবা চৌধুরী কলোনী এলাকায় রাস্তার নর্দমার নোংরা জল ঢুকে বারোমাস ভাসিয়ে দিচ্ছে গৃহস্থের উঠোন।

পর্যটন শহর ঝাড়গ্রামের নিকাশির স্বাস্থ্য ফেরেনি। বাম আমলে পরিল্পনাবিহীন ভাবে কিছু নর্দমা তৈরি হয়েছিল। ২০১৩-র ডিসেম্বরে পুরবোর্ডের ক্ষমতায় তৃণমূল আসার পরেও ছবিটা কিন্তু তেমন বদলায়নি।

Advertisement

২১ বর্গ কিলোমিটার শহরে মোট ওয়ার্ড ১৮টি। শহরে মোট রাস্তার পরিমাণ ২২০ কিলোমিটার। আর নর্দমা রয়েছে সাকুল্যে ৩৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাম জমানায় ১৯ কিলোমিটার নিকাশি নালা তৈরি হয়েছিল। তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের কার্যকালে গত দু’বছরে আরও ২০ কিলোমিটার নর্দমা তৈরি হয়েছে। তা সত্ত্বেও শহরের অনেক এলাকায় এখনও নর্দমা নেই।

ফলে, নোংরা জলে ভাসে এলাকার রাস্তা। কোথাও কাঁচা নর্দমার নোংরা জলে দূষিত হচ্ছে পুরসভার টাইম কল চত্বর। কোথাও আবার নর্দমার জল ঢুকে গৃহস্থের বাড়ির উঠোনের পাতকুয়োর চারপাশে নরক-গুলজার অবস্থা। নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে নিকাশি অবরুদ্ধ। শহরের অভিজাত এলাকা থেকে বস্তি অঞ্চল--সর্বত্রই একই ছবি।

Advertisement

শহরের দক্ষিণ প্রান্তের চেয়ে উত্তর প্রান্ত ৫৫ ফুট নিচু। ঝেঁপে বৃষ্টি হলে রাস্তা উপচে বইতে থাকে নোংরা জলরাশি। অনেক বাড়িতেই নোংরা জল ঢুকে যায়। বাম আমলে সমস্যার সমাধানের জন্য মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী নিকাশির পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি।

শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কয়েকটি বড় নালা রয়েছে। তাতেও সমস্যা মেটার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নুননুনগেড়িয়া এলাকার কাঁচা নর্দমার বেহাল অবস্থা। স্থানীয় বাসিন্দা ঝুমা সাহার অভিযোগ, নরকের মধ্যে আছি। নর্দমার নোংরা জল ঘরের উঠোনে জল থইথই করে। অভিযোগ করে করে ক্লান্ত। স্থানীয় বাসিন্দা বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও অভিযোগ, ‘‘বাড়ির সামনের রাস্তায় বারো মাস নোংরা জল দাঁড়িয়ে থাকায় হাঁটাচলা করা দায়।’’

বর্তমান তৃণমূলের পুরবোর্ডও পরিকল্পনাবিহীন কিছু নালা ও বড় নালা তৈরি করছেন। কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে নর্দমা তৈরি হচ্ছে বটে, তবে দুর্ভোগের অবসান হয়নি। পুর-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করতে গেলে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। সাধ্যমতো ‘নিকাশির উন্নয়ন-কাজ’ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন