লক্ষ্মণ-কাণ্ডের পরে প্রকাশ্যে না-মানলেও সিপিএম নেতৃত্বের রণকৌশল থেকেই ইঙ্গিত পূর্ব মেদিনীপুরে সাংগঠনিক ভাবে তাঁরা কতটা বেকায়দায়। এই পরিস্থিতিতে মরিয়া নেতৃত্ব চাইছেন জেলা জুড়ে লাগাতার জোরদার প্রচার-অভিযান শুরু করে কর্মীদের মনোবল ফেরানোর সঙ্গেই সংগঠনকে চাঙ্গা করতে।
এই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার জেলা সিপিএম কার্যালয়ে দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক হয়। সেখানে ছিলেন জেলার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব। সিপিএম সূত্রে খবর, রবীনবাবুর উপস্থিতিতে ওই বৈঠকে জানানো হয় দল ছাড়তে চেয়ে যে সব জেলা কমিটির সদস্য পদত্যাগপত্র দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে (বহিষ্কৃত জেলা কমিটির সদস্যদের বাদ দিয়ে) আলাদা ভাবে কথা বলবেন জেলা নেতৃত্ব। রাজ্য নেতৃত্বের এই নির্দেশ মতো ইতিমধ্যে অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও সিপিএমের একাংশের দাবি। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী ১৩ অগস্ট দলের জেলা কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে দলের পলিটব্যুরোর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রের উপস্থিত থাকার কথা।
ছন্নছাড়া ঘর গোছাতে ‘বিক্ষুব্ধদের’ ফেরানো, জনসাধারণের মন পেতে জেলার নানা জায়গায় দলীয় সভা হবে বলেও ঠিক হয়েছে এ দিন। লক্ষ্মণ শেঠের একদা খাসতালুক হিসেবে পরিচিত হলদিয়ায় বৃহস্পতিবার দলীয় সভা করে সেই প্রচার শুরু করেছে সিপিএম। সুতাহাটার সুবর্ণজয়ন্তী হলে হলদিয়া জোনাল কমিটি এবং তার অধীন ১৭টি লোকাল কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। সম্প্রতি লক্ষ্মণ অনুগামী নেতাদের দ্বারা বহিষ্কৃত সুতাহাটা লোকাল কমিটির সদস্য প্রবীন সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে জোনাল কমিটির সম্পাদক করা হয়। একই সঙ্গে ৬টি লোকাল কমিটির সম্পাদকও বদল করা হয় এ দিন।
এ দিনের বক্তৃতায় আগাগোড়াই লক্ষ্মণ শেঠ ও তার অনুগামীদের তুলোধনা করেন রবীনবাবু। হলদিয়া জোনাল অফিস (লক্ষ্মণ পরিবার যেখানে থাকেন সেই সুকুমার সেনগুপ্ত ভবন) বেদখল হওয়ার প্রশ্নে রবীনবাবু এ দিন বলেন, “মালিকানা প্রশ্নে আমরা সাধারণ মানুষকে প্রকৃত তথ্য জানাব।” আগামী ১১ অগস্ট তমলুকেও ওই একই ধরনের সভা হবে বলে এ দিন জানা গিয়েছে।