পরীক্ষাকেন্দ্রে সোমনাথ দাস। ছবি: কৌশিক মিশ্র।
বাবা মারা গিয়েছেন এগারো বছর হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে আপনজন বলতে মা একাই। নিজের পা দু’টোও ঠিকমতো চলে না। জীবনে চলার পথে দারিদ্রও সঙ্গী। তবে প্রতিবন্ধকতা ও অভাবের বাধা সরিয়ে বড় হতে চায় এগরা ঝাটুলাল হাইস্কুলের ছাত্র সোমনাথ দাস। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিকে তাই সফল হতে মরিয়া সে। এগরা শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোমনাথের পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে এগরা স্বর্ণময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে।
সোমনাথের কথায়, “মা কোনও মতে বাড়ি ভাড়ার টাকা দিয়ে সংসার ও আমার পড়াশোনা চালান। বড় হয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে মায়ের সব দুঃখ দূর করতে চাই।” পায়ের সমস্যার জন্য সোমনাথের পক্ষে পরীক্ষাকেন্দ্রে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্রের এক তলার একটি ঘরে সোমনাথের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। সোমনাথের মা অঞ্জলিদেবী বলেন, “জন্ম থেকেই ছেলের পা দু’টি অচল। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। ডাক্তার দেখে বলেছিলেন, নিজে চেষ্টা করলে হয়তো ও কিছুটা চলাফেরা করতে পারবে। ওর নিজের ইচ্ছাই ওকে এতদূর টেনে এনেছে।”
এগরা ঝাটুলাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন শীট বলেন, “সোমনাথের খুব মনের জোর। নিজের উৎসাহেই ও বড় হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে।” তাই পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা শুরুর আগেও মনকে শক্ত করে সোমনাথ বলে চলে, ‘বড় আমাকে হতেই হবে। মায়ের একমাত্র ভরসা যে আমিই।’