গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস-সহ তিনটি দোকানে চুরির অভিযোগ উঠল। কোলাঘাট বিট হাউস থানার মনোহরপুর বাজারে খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রবিবার রাতের ঘটনায়। পঞ্চায়েত অফিস ও সংলগ্ন তিনটি দোকানে চুরির ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা পঞ্চায়েত অফিসের দরজা, একাধিক আলমারি ভেঙে নগদ ৩ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছে। উল্টো দিকের সোনার দোকানের দরজা ভেঙে প্রায় ৩০ হাজার টাকার সামগ্রী, একটি বৈদ্যুতিন সামগ্রীর দোকান, একটি সাইকেল মেরামতির দোকানের দরজা ভেঙে সামগ্রীও লুঠ করেছে দুষ্কৃতীরা।
ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ মনোহরপুর বাজারে এক চায়ের দোকানী তাঁর দোকান খুলতে এসে প্রথম চুরির ঘটনা জানতে পারেন। পরে তিনিই গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্যকে ফোনে ঘটনার কথা জানান। খবর পেয়ে কোলাঘাট বীট হাউস থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। যদিও সোমবার সন্ধে অবধি পুলিশ দুষ্কৃতীদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। চুরি যাওয়া জিনিসও উদ্ধার হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা দলবদ্ধ ভাবে এসে এই চুরি করেছে। তাদের ধরতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলাঘাটে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের দেউলিয়া বাজার থেকে গ্রামীণ পাকা সড়কে মানুয়াগামী রাস্তায় প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে মনোহরপুর বাজার। রাস্তার ধারে খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস। ওই বাজারে মুদি দোকান, সার দোকান, সাইকেল মেরামতি, বৈদ্যুতিন সামগ্রী, সোনা দোকান, সব্জি দোকান মিলিয়ে ৪০টিরও বেশী স্থায়ী দোকান রয়েছে। এখানে হাটও বসে। ফলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিদিন ওই বাজারে লোকজনের যাতাযায়ত থাকে। রবিবার সন্ধ্যায় ওই পঞ্চায়েত অফিসে কাজ চলছিল। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ অফিসের কর্মী-সদস্যেরা বাড়ি ফিরেন। কিন্তু ভোর রাতে এক চা দোকানী দোকান খুলতে এসে দেখেন পঞ্চায়েত অফিসের সামনের দরজা খোলা! তখনই পঞ্চায়েতের সদস্য শুভ্রকান্তি অধিকারীকে ফোন করে জানান।
তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শুভ্রকান্তিবাবু বলেন, “গিয়ে দেখি সামনের দিকের দরজার তালা ভাঙা, ভিতরে চারটি আলমারি ভাঙা পড়ে। চেয়ার টেবিল উল্টানো, বিভিন্ন নথিপত্র তছনছ হয়ে রয়েছে।” ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রাধানাথ ঘড়া জানান, প্রায় আড়াই হাজার টাকা ও একটি ক্যামেরা নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ওই ক্যামেরায় একশো দিনের কাজের ছবি তোলা হয়। তবে নথিপত্র চুরি হয়নি বলে তিনি জানান।
একই সঙ্গে প্রধান জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত অফিসে নৈশপ্রহরী নেই। বাজারেও নেই। তিনি বলেন, “সচরাচর এই এলাকায় রাতে পুলিশ টহলদারি থাকে না। বছর পাঁচেক আগে এই বাজারে একবার চুরির ঘটনা ঘটেছিল। তখন দোকানদাররা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে নৈশ প্রহরী রাখে। কিন্তু বছরখানেক পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।” পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, এই বাজারের প্রায় সব দোকানদার রাত ৯টার মধ্যে দোকান বন্ধ করে চলে যায়। বাজারে রাতে লোকজন প্রায় থাকেই না।