পটাশপুরে খুন যুব তৃণমূল নেতা, অভিযোগ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের

খুন হয়ে গেলেন পটাশপুরের এক যুব তৃণমূল নেতা। অভিযোগ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন করা হয়েছে চিত্তরঞ্জন বর (৩৬) নামে আড়গোয়াল ১৪ নম্বর অঞ্চলের ওই যুব সভাপতিকে। সোমবার রাতে পটাশপুর-২ ব্লকের সাতশতমাল গ্রামের এই ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও ৭জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটাশপুর শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৪ ০৭:০৬
Share:

এগরা হাসপাতালে জখম তৃণমূল কর্মীরা। ছবি: কৌশিক মিশ্র।

খুন হয়ে গেলেন পটাশপুরের এক যুব তৃণমূল নেতা। অভিযোগ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন করা হয়েছে চিত্তরঞ্জন বর (৩৬) নামে আড়গোয়াল ১৪ নম্বর অঞ্চলের ওই যুব সভাপতিকে। সোমবার রাতে পটাশপুর-২ ব্লকের সাতশতমাল গ্রামের এই ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও ৭জন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের ভাই সত্যরঞ্জন বর, তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অপরেশ সাঁতরা-সহ ১৯ জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অন্য দিকে, অপরেশ সাঁতরার অনুগামী গুলাবি বিবি, সাতশতমাল গ্রামের বুথ সভাপতি শেখ মাবুদ-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। এগরার এসডিপিও সমীর বসাক বলেন, “দু’টি অভিযোগের ভিত্তিতে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ নজরদারি চলছে।” ধৃতরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবেই পরিচিত হলেও জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, “পটাশপুরের ওই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও বিষয়ই নয়। ওখানে দুষ্কৃতীদের হামলায় মৃত্যু হয়েছে এলাকার যুব সভাপতির।”

Advertisement

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অপরেশ সাঁতরার গোষ্ঠীর সঙ্গে বর্তমান ব্লক যুব সভাপতি স্বপন মাইতি ও তৃণমূল নেতা পীযূষ নন্দীর গোষ্ঠীর কোন্দলের অভিযোগ রয়েছে। মাসখানেক আগে অপরেশ সাঁতরা, পীযূষ নন্দী ও স্বপন মাইতির নামে হামলার অভিযোগও জানিয়েছিলেন। সোমবারের সংঘর্ষে নিহত চিত্তরঞ্জন বর, স্বপন-পীযূষ ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকায় পরিচিত।

কী ঘটেছিল সোমবার রাতে?

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাত এগারোটা নাগাদ সাতশতমালের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে বাড়ি ফিরছিলেন শেখ মাবুদ ও যুব সভাপতি চিত্তরঞ্জন বর। বুথ থেকে বেরনোর সময়েই অপরেশ গোষ্ঠীর একদল সমর্থক তাঁদের বোমা-বন্দুক নিয়ে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন দলের কয়েকজন সদস্য। সংঘর্ষে জখম হন তাঁরাও। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা জখমদের উদ্ধার করে এগরা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় চিত্তরঞ্জনবাবুর। দলের জখম কর্মী শেখ রজ্জাক আলি, শেখ সাজ্জাত, শেখ মেহরাজ, রকেয়া বিবি এগরা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর মেদিনীপুর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে শেখ আবদুল মাবুদ, হাফেজ আবুল কালাম, শেখ রাজু নামে তিন তৃণমূল কর্মীর।

স্বপন মাইতি বলেন, “অপরেশ সাঁতরার নেতৃত্বে সাতশতমাল বস্তিতে অঞ্চল যুব সভাপতি ও বুথ সভাপতির ওপর বোমা-বন্দুক নিয়ে হামলা চালানো হয়। দলের ব্লকের কয়েকজন কর্মকর্তাদের মদতে অপরেশ সাঁতরা এ কাজ করতে সাহস পাচ্ছে।” তৃণমূল নেতা পীযূষ নন্দী বলেন, “আগে অত্যাচার করত সিপিএম। আর এখন দলেরই অপরেশ সাঁতরাদের মতো নেতাদের হাতে অত্যাচারিত হতে হচ্ছে।” ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক কর্মাধ্যক্ষ অপরেশ সাঁতরা বলেন, “এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গণ্ডগোল রয়েছে ঠিকই। তবে গতকাল আমি ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলাম। ওদের অভিযোগ ঠিক নয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন