পরীক্ষাকেন্দ্র বাড়লেও কমলো পরীক্ষার্থী

পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ল দু’টি। গতবার যেখানে ছিল ১৪৮টি, এ বার বেড়ে হল ১৫০টি। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের সুবিধে হবে বলেই মনে করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তবে পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় হেরফের হয়েছে। ২০১৪ সালে জেলায় মাধ্যমিক ছিল ৬৯,৩৩১। এ বার সেখানে ৬৮,৩৪৪। অর্থাৎ ৯৮৭ জন কমেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩৮
Share:

পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ল দু’টি। গতবার যেখানে ছিল ১৪৮টি, এ বার বেড়ে হল ১৫০টি। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের সুবিধে হবে বলেই মনে করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তবে পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় হেরফের হয়েছে। ২০১৪ সালে জেলায় মাধ্যমিক ছিল ৬৯,৩৩১। এ বার সেখানে ৬৮,৩৪৪। অর্থাৎ ৯৮৭ জন কমেছে।

Advertisement

আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। চলবে ৪ মার্চ পর্যন্ত। পরীক্ষা সুষ্ঠু ভাবে করতে ইতিমধ্যে মেদিনীপুরে প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছে। ছাত্র জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। ফলে, এই পরীক্ষা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ থাকেই। উদ্বেগে থাকেন অভিভাবকেরাও। স্কুল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্র হলে অনেক সময় সমস্যার সৃষ্টি হয়। বাস-ট্রেকার-অটো কিংবা মোটর সাইকেলে বেশ কয়েক কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছতে হলে ভোগান্তির শেষ থাকে না। পরীক্ষা শুরুর আগে ক্লান্তি দেখা দেয়।

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এ বার পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বাড়ানো হল। পর্ষদ সূত্রে খবর, ২০১২ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১২৯টি। ২০১৩ সালে ১৪৩টি। ২০১৪ সালে ১৪৮টি। আর এ বার তা বেড়ে হয়েছে ১৫০টি। জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের সুবিধের জন্যই পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনও রকম সমস্যায় না পড়ে, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষাপর্ব সম্পন্ন করতে সব রকম পদক্ষেপও করা হচ্ছে।”

Advertisement

গত বছরের তুলনায় এ বার পরীক্ষার্থীর সংখ্যার সামান্য হেরফের হয়েছে। কেমন?

২০১৪ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৯,৩৩১। এ বার সেখানে ৬৮,৩৪৪। অর্থাৎ ৯৮৭ জন কমেছে। কেন? পর্ষদের দাবি, এমন হেরফের হতেই পারে। ২০১৩ সালে জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৯,৩৬১। তার আগের বছর অর্থাৎ, ২০১২ সালে ৬৭,৮৬৪। এ বার ৬৮,৩৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৩৩,০১৯। ছাত্রী ৩৫,৩২৫। অর্থাৎ, ছাত্রের থেকে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। জেলায় চারটি মহকুমা। এর মধ্যে খড়্গপুর মহকুমায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫,৪৪৮। মেদিনীপুরে (সদর) ১৬,৬৬৯। ঘাটালে ১২,২৩৬। এবং ঝাড়গ্রামে ১৩,৯৯১। খড়্গপুরে ২৫,৪৪৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ১২,৭০৪। ছাত্রী ১২,৭৪৪। মেদিনীপুরে ১৬,৬৬৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৮,১৯১। ছাত্রী ৮,৪৭৮। ঘাটালে ১২,২৩৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৫,৪০৩। ছাত্রী ৬,৮৩৩। ঝাড়গ্রামে ১৩,৯৯১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৬,৭২১। ছাত্রী ৭,২৭০।

এ বারও কিছু পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রকে ‘স্পর্শকাতর’ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্ণিত করা হয়েছে। এই সব কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা থাকছে। গতবার যে সব কেন্দ্রে সামান্য উত্তেজনা ছড়িয়েছিল, এ বার সেই সব কেন্দ্রেও বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে যাতে পানীয় জল, শৌচাগার প্রভৃতির সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকে, সময় মতো পুলিশ মোতায়েন হয়, ইতিমধ্যে তা নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

পরীক্ষার দিনগুলোয় জেলায় বাস পরিবহণ ব্যবস্থা অন্য দিনের মতো রাখারও আর্জি জানানো হয়েছে। জেলায় যে ১৫০টি কেন্দ্র থাকছে, তার মধ্যে মূলকেন্দ্র ১০৬টি। আগেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ এসে পৌঁছয়। যেখানে জানানো হয়েছিল, কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না। পর্ষদ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে পার্শ্বশিক্ষকদের নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। পর্ষদ জানিয়েছে, যদি পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিদর্শক থাকেন, সেই ক্ষেত্রে ওই কেন্দ্রে যে সব বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়ে না, সেই বিদ্যালয়গুলো থেকে অনুমোদিত শিক্ষকদের এনে নজরদারির কাজে নিয়োগ করা যেতে পারে। নজরদারির জন্য শিক্ষকের অভাব হলে এলাকার অন্য স্কুলের অনুমোদিত শিক্ষকদের এই দায়িত্ব গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক।

এ-ও জানানো হয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গীর প্রবেশ পর্ষদের নির্দেশ অনুযায়ী অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। শুধুমাত্র পরীক্ষার প্রথম দিন পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে এক জনকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট আগে অর্থাৎ ১১টা ১৫ মিনিটে তাঁকে পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে নিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষার্থীদের কোনও রকম বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি যেমন মোবাইল ফোন বা ক্যালকুলেটর নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন