মৃত্যু ভাগ্নিরও

ফোঁটা নিয়ে ফেরার পথে মৃত তরুণ

দুই দিদির থেকে ভাইফোঁটা নেওয়া আর হল না। এক দিদির বাড়ি থেকে আর এক দিদির বাড়িতে মোটরবাইকে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক তরুণের। মৃত্যু হয়েছে তাঁর পাঁচ বছরের এক ভাগ্নিরও। শনিবার সকালে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের হলদিয়া থানার কাছে চিরঞ্জীবপুরে ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দু’জন। অন্য দিকে, এ দিন ভোরে ওই সড়কেই তমলুকের নোনাকুড়ি বাজারের কাছে দু’টি ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। আহত পাঁচ জন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া ও তমলুক শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৩
Share:

রাজশ্রী দাস। —নিজস্ব চিত্র।

দুই দিদির থেকে ভাইফোঁটা নেওয়া আর হল না। এক দিদির বাড়ি থেকে আর এক দিদির বাড়িতে মোটরবাইকে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক তরুণের। মৃত্যু হয়েছে তাঁর পাঁচ বছরের এক ভাগ্নিরও। শনিবার সকালে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের হলদিয়া থানার কাছে চিরঞ্জীবপুরে ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দু’জন। অন্য দিকে, এ দিন ভোরে ওই সড়কেই তমলুকের নোনাকুড়ি বাজারের কাছে দু’টি ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। আহত পাঁচ জন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুর্গাচকের জি ব্লকে দিদির বাড়িতে ভাইফোঁটা নিয়ে চিরঞ্জীবপুরে আর এক দিদির বাড়িতে মোটরবাইকে করে ফোঁটা নিতে যাচ্ছিলেন দুই ভাই নেপাল ভুঁইয়া ও গোপাল ভুঁইয়া। মোটরবাইকে ভাই ছাড়াও নেপালের সঙ্গে ছিল তাঁদের দুই ভাগ্নি জয়শ্রী দাস ও রাজশ্রী দাস। তবে বাইকে শুধুমাত্র নেপালের মাথাতেই হেলমেট ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাছাড়াও তাঁরা চার জন মিলে বিপজ্জনকভাবে একটি বাইকে উঠেছিলেন। চিরঞ্জীবপুরে বিপরীতদিক থেকে আসা একটি লরির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই নেপাল (১৯) ও রাজশ্রীর (৫) মৃত্যু হয়। নেপালের বাড়ি সুতাহাটার বাড়বাসুদেবপুরে। গুরুতর আহত অবস্থায় গোপাল ও জয়শ্রীকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হলদিয়া থানার সামনে রাস্তার দু’ধারে নিয়ম না মেনে লরি দাঁড়িয়ে থাকলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয়। পুলিশের গাফিলতির কারণেই দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। লরির চালক পলাতক। পুলিশ লরিটি বাজেয়াপ্ত করেছে। রাজশ্রীর বাবা পেশায় ব্যবসায়ী। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে শোকস্তব্ধ দুর্গাচকের জি ব্লকের বাসিন্দারা। রাজশ্রীর কাকিমা অমৃতা দাস বলেন, “এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর আমাদের বাড়িতে কেউ কথা বলার অবস্থায় নেই।” রাজশ্রীর মা সোনামণি দাসও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

অন্য দিকে, শনিবার ভোরে তমলুকের নোনাকুড়ি বাজারের কাছে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে একটি পিক আপ ভ্যানের সঙ্গে মেশিন ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে দীপক দাস (৩৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। আহত আরও পাঁচ জন। মৃত ও আহতেরা সকলেই মেশিন ভ্যানের যাত্রী। এ দিন দীপকবাবু-সহ নোনাকুড়ি এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা মিষ্টি তৈরির কাজে মহারাষ্ট্রের পুনে ও ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে গিয়েছিলেন। এ দিন ভোরে তাঁরা ট্রেনে করে খড়্গপুরে নামেন। এরপর লোকাল ট্রেনে করে মেচেদা স্টেশনে নেমে একটি মেশিন ভ্যানে করে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক ধরে তাঁরা তমলুকের দিকে আসছিলেন। এ দিন ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ মেশিন ভ্যানটি নোনাকুড়ি বাজারে ঢোকার সময় বিপরীতদিক থেকে আসা একটি পিক আপ ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ঘটনাস্থলেই দীপকবাবুর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় ওই ভ্যানেরই যাত্রী সইদা বিবির ডান পায়ের হাঁটুর নীচের অংশ কাটা পড়েছে। পেশায় ফুল ব্যবসায়ী সইদা বিবি তমলুকের শিউরি গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দারাই আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিত্‌সার পর তাঁদের তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মেশিন ভ্যানের চালক লালু পাখিরা বলেন, “প্রতিদিনের মতো এ দিনও মেচেদা বাসস্ট্যান্ড থেকে গাড়িতে যাত্রী নিয়ে নোনাকুড়ি বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। বাজারে ঢোকার সময় দেখি বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিক আপ ভ্যান আমাদের গাড়ির দিকে ঘেঁষে আসছে। সেই সময় আমি ও অন্য যাত্রীরা চিত্‌কার করতে থাকি। তা সত্বেও ওই পিক আপ ভ্যান সরে না গিয়ে শেষ পর্যন্ত আমাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে।” পিক-আপ ভ্যানের চালক পলাতক। পুলিশ দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি দু’টি বাজেয়াপ্ত করেছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন