বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার নারায়ণগড়ের হেমচন্দ্র অঞ্চলের পাইখোলা গ্রামের ঘটনা। জখম বিজেপি কর্মী কালীপদ জানাকে বেলদা গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে দলের পোস্টার সাঁটানোর কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে তৃণমূল কর্মীরা তাঁর উপর হামলা চালায়। তাঁরা টাঙি দিয়ে কালীপদবাবুর মাথায় আঘাত করেন বলে অভিযোগ। বুধবার বিজেপির পক্ষ থেকে বেলদা থানায় তৃণমূলের বুথ কর্মী অনুপ দাস, পীযূষ জানা-সহ ১২ জন কর্মীর বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বুধবার ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি কৃষ্ণপদ রায়, যুব মোর্চা সভাপতি গৌরীশঙ্কর অধিকারীর নেতৃত্বে বেলদায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। পনেরো মিনিট অবরোধ চলার পরে পুলিশ এসে অভিযোগের তদন্তের আশ্বাস দিলে অবরোধ উঠে যায়।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কালীপদ জানা এলাকায় তৃণমূল করতেন। তবে তৃণমূলের অন্য একটি গোষ্ঠীর লোকেদের সঙ্গে গোলমালের জেরে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে যান। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে হেমচন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েতের কেয়াঝুড়ি গ্রামে একটি বোমাবাজির ঘটনায় কালীপদ জানা-সহ দশ জনের নামে পুলিশে অভিযোগ হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তিন মাস জেলও খেটেছেন কালীপদবাবু। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে কালীপদবাবু বিজেপিতে যোগ দেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালীপদ জানা নিজের বিক্রি করা ধানের টাকা আনতে গ্রামেরই একটি ধানের গোলায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে স্থানীয় শিব মন্দিরের কাছে বিজেপির সদস্য সংগ্রহের পোস্টার সাঁটানোর কাজ করছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূল কর্মীরা তাঁর উপর হামলা চালায়। টাঙির আঘাতে রক্তাত্ত অবস্থাতেই তিনি পড়েছিলেন। খবর পেয়ে তাঁর মেয়ে স্বাগতা ও ভাইপো শিশির জানা ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের আক্রমণ করার অভিযোগ উঠেছে। এরপর জখম কালীপদবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বুধবার হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কালীপদ জানা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সভা থেকে ফিরে মন্দিরের কাছে ওঁরা (তৃণমূল) জটলা করছিল। আমকে পোস্টার সাঁটাতে দেখে তাঁরা আমার বিজেপি করার কারণ জিজ্ঞাসা করে। তখন আমি মিথ্যা অভিযোগে জেল খাটানোর কথা তাঁদের স্মরণ করিয়ে দিলে গণ্ডগোল বাধে। এরপরেই তৃণমূলের অনুপ দাস, পীযূষ জানারা আমাকে খুনের চেষ্টা করে।” বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী তো খড়্গপুরে এসে কর্মীদের চাঙা করতে চমকানো, জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলে গিয়েছেন। সেই অনুযায়ী কাজ করতেই তাঁর দলের কর্মীরা বিজেপির ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে। আমরা এই ঘটনার প্রাতিবাদের পাশাপাশি জেলার তৃণমূল নেতাদের কাছে বিজেপির উপর হামলা বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।” যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “আমি খোঁজ নিয়েছি। ওই বিজেপি কর্মী গ্রাম্য বিবাদের জেরে আক্রান্ত হয়েছেন। এর সঙ্গে দলের বা রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা এই ধরনের ঘটনাকে কখনও সমর্থন করি না।” অন্য দিকে, মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়ায় বিজপি কর্মী মধূসুদন মাহাতোকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মধুসুদনবাবুকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।