বেতন মিলছে না, ক্ষুব্ধ নতুন প্রাথমিক শিক্ষকরা

স্কুলে যাচ্ছেন। পড়াচ্ছেনও। কিন্তু মাইনে কোথায়? মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও চলতি বছরের গোড়ায় নিয়োগ হওয়া পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় দেড় হাজার প্রাথমিক শিক্ষক এখনও এক মাসের মাইনেও পাননি!

Advertisement

সুমন ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০০:৩৪
Share:

স্কুলে যাচ্ছেন। পড়াচ্ছেনও। কিন্তু মাইনে কোথায়? মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও চলতি বছরের গোড়ায় নিয়োগ হওয়া পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় দেড় হাজার প্রাথমিক শিক্ষক এখনও এক মাসের মাইনেও পাননি! শুধু তাই নয়, ৫ মাস হতে চলল, এখনও অর্থ দফতরের অনুমোদনই মেলেনি ৪৪৩ জন শিক্ষকের ক্ষেত্রে। এই পরিস্থিতিতে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন প্রাথমিকে নব নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

Advertisement

কবে মাইনে পাবেন এই সব শিক্ষক-শিক্ষিকারা? কবেই বা ৪৪৩ জনের অনুমোদন মিলবে অর্থ দফতরের কাছ থেকে? এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছুই জানাতে পারেনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদের সভাপতি স্বপন মুর্মু বলেন, “নব নিযুক্ত যে সব শিক্ষকদের অর্থ দফতরের অনুমোদন রয়েছে বা যাঁদের অনুমোদন নেই, সেই তালিকা তৈরি করতে সময় লেগে গিয়েছিল। তারপর অনুমোদন পাওয়া শিক্ষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ শুরু হয়। এখনও সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা যায়নি বলেই মাইনে দেওয়া যাচ্ছে না।” তবে চলতি মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু পরীক্ষায় বসে পাশ করা ও নিয়োগ হওয়া যে ৪৪৩ জনের যে এখনও অনুমোদনই মেলেনি, তাঁদের কী হবে? সভাপতি বলেন, “শিক্ষা দফতর ও অর্থ দফতরের মধ্যে আলোচনা চলছে। আশা করি, শীঘ্রই অনুমোদন মিলে যাবে।”

সম্প্রতি রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতোই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গত ২১ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। সেখানেই ১৫৫৫ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ১১১২ জন নিয়োগপত্র পেলেও ৪৪৩ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া যায়নি। সফল ৪৪৩ জন সংসদ অফিসে জমায়েত করে বিক্ষোভও দেখান। সমস্যা সমাধানে অর্থ দফতরের অনুমোদন ছাড়াই তাঁদেরও নিয়োগপত্র দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সংসদ। ১১১২ জনের বেশিরভাগই জানুয়ারি মাসের শেষে স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন। বাকি ৪৪৩ জন স্কুলে যোগ দেন পরের মাস, অর্থাত্‌ ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু এই প্রায় দেড় হাজার প্রাথমিক শিক্ষক এখনও মাইনে পাননি। নব-নিযুক্ত শিক্ষকদের কথায়, “দূরের স্কুলে চাকরি করতে গিয়ে খরচ হচ্ছে। মাইনে না পেলে কতদিন এ ভাবে চলা যাবে?”

Advertisement

সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইনে দেওয়ার ক্ষেত্রে সংসদ ইচ্ছে করে দেরি করছে। কারণ, নিয়োগপত্র না পাওয়াতেই যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা সংসদের অজানা নয়। এবার কিছু শিক্ষককে মাইনে দেওয়া হলে ফের অন্যরা বিক্ষোভ দেখিয়ে পথে নামতে পারেন। তাই কিছুটা দেরির চেষ্টা হচ্ছে। যদি তার মধ্যে বাকিদেরও অর্থ দফতরের অনুমোদন মিলে যায় তাহলে সকলকেই এক সঙ্গে মাইনে দেওয়া হবে। কিন্তু অর্থ দফতরের অনুমোদন মিলতে এতটা দেরি হতে পারে তা সংসদ বুঝতে পারেনি। ফলে এখন দু’পক্ষেরই ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে সংসদকে। প্রকাশ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ হলে সেই সমস্ত শিক্ষককে দূরে বদলি করে দেওয়ার ভয়ে এখনও কেউ প্রকাশ্যে বিক্ষোভের রাস্তায় হাঁটছেন না ঠিকই, কিন্তু আরও কিছু এভাবে চললে সকল শিক্ষকই প্রকাশ্য বিক্ষোভেই সামিল হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement