ঘাটাল কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির ভোটে চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের সবক’টি আসনেই হেরে গেল তৃণমূল ব্লক সভাপতির গোষ্ঠী। ব্লকের ২৩টি আসনেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল ব্লক সভাপতি চিত্ত পালের বিরোধী হিসেবে পরিচিত সুজয় পাত্র, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সুকুমার চক্রবর্তীর গোষ্ঠীর প্রার্থীরা। সোমবার রাতেই বিরোধী গোষ্ঠীর কর্মী-সমর্থকেরা চিত্ত পাল-সহ নেতাদের ঘিরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রকাশ্যেই ব্লক সভাপতির পদ থেকে চিত্ত পালকে সরানোর দাবিতে সরব হয় কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। পরে পুলিশ গিয়ে ও দলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
যদিও ব্যাঙ্কের ভোটে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে চিত্ত পালের সাফাই, “আমরা এক সঙ্গে ভোট করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আসন ভাগ নিয়ে মতান্তর তৈরি হওয়ায় জল গড়ায় ভোটের দিকে।” ভোটে সবক’টি আসনে হার প্রসঙ্গে চিত্তবাবুর দাবি, “আমরাই জয়ী হতাম। কিন্তু বিভিন্ন কারণে মোট ভোটারের দশ শতাংশের ব্যালট পেপার বাতিল হয়েছে। বাতিল হওয়া ভোটের বেশিভাগই আমাদের সমর্থনে ছিল।” চিত্ত পালের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত সুজয় পাত্রের বক্তব্য, “দলের জন্মলগ্ন থেকে আমরা তৃণমূল করছি। দীর্ঘদিন গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে রাজনীতি করেছি। তাই কৃষকরা আমাদেরই সমর্থন করেছেন। আর এখানেই পরিষ্কার, সাধারণ মানুষ কাদের চাইছেন।”
মঙ্গলবার ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে চিত্ত পালের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে একাধিক গ্রামে পুলিশি টহলও চলছে। চিত্ত পালের অনুগামী দলের এক জেলা নেতা গৌতম ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “নেত্রীর নির্দেশে এখন দলে গোষ্ঠী কোন্দল বলে কিছু নেই। সবাই দলেরই কর্মী। তবে ব্লক সভাপতির কথাকে মান্যতা না দিলে কোন্দল তো থাকবেই।”
অন্য দিকে, চন্দ্রকোনা-২ ব্লকে মোট ১৯টি আসনের মধ্যে ব্লক তৃণমূল সভাপতি অমিতাভ কুশারীর গোষ্ঠীর প্রার্থীরা ১১টি আসনে জয়ী হয়েছে। ব্লক সহ-সভাপতি হীরালাল ঘোষের গোষ্ঠীর প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে ৮টি আসনে। যদিও কোন্দল এড়িয়ে ব্যাঙ্কের ভোট করার দাবিতে সরব হয়েছেন ব্লকের একাংশ তৃণমূল কর্মী। ভোটের ফল ঘোষণার পর হীরালাল ঘোষের কৌশলী মন্তব্য, “এই ভোটেই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে গেল। এ বার জেলা নেতৃত্বই বিচার করুক।” আর তৃণমূল ব্লক সভাপতি অমিতাভ কুশারী বলেন, “ভোট হওয়াটা আমি কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারিনি। এতে দলেরই নাম খারাপ হল। আর যাতে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেদিকে নজর দেব।”