তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পথে নেমেছেন দলের একাংশ কর্মী-সমর্থক। এর প্রতিকার তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব করবেন বলেই আস্থা রাখছেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র।
শুক্রবার তমলুকে রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেনবাবুর বিরুদ্ধে ধিক্কার-মিছিল হয়। শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক ক্রীড়ার উদ্বোধনে মন্ত্রী মেদিনীপুরে এসেছিলেন। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দলে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আছে। সেখানে উপযুক্ত সদস্যরাও রয়েছেন। পার্থদা, বক্সীদা, মুকুলদা আছেন। তাঁরাই বিচার করবেন। যারা এ ভাবে দলকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে, তাদের বিচার জনগণ করবে না, শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিও করবে।”
তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী বলেন, “বিষয়টি নজরে এসেছে। জেলা নেতৃত্বকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে পদক্ষেপ করা হবে।” তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর অবশ্য বক্তব্য, “দল এখন বিশাল। নিশ্চয় ছোটখাটো ঘটনা ঘটছে। তবে সে সব আমরা সামলে নিয়েছি।”
তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা রাজনীতিতে তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের সঙ্গে মন্ত্রী তথা তমলুকের বিধায়ক সৌমেনবাবুর ঘনিষ্ঠদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। তার জেরেই শুক্রবার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের জন্য টাকা নেওয়া, দরিদ্রদের সাহায্য দেওয়া নিয়ে দুর্নীতি, উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকার মনোনীত সদস্য নিয়োগে অযোগ্য লোকেদের অগ্রাধিকার, উপদল তৈরির মতো নানা অভিযোগ তুলে ধিক্কার মিছিল হয় বলে তৃণমূলে অন্দরের খবর। মিছিলের পুরোভাগে থাকা তৃণমূলের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক সভাপতি দিবাকর জানা, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বামদেব গুছাইতরাও শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। এ দিন নাম না করে তাই শুভেন্দুকেও বিঁধতে ছাড়েননি সৌমেনবাবু। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “প্রখ্যাত হয়ে আপনাদের (সংবাদমাধ্যম) মাধ্যমে তো আর জনগণের কাছে পৌঁছতে পারলাম না। কতিপয় ব্যক্তি যাঁরা ভীষণ সত্, যাঁরা দলে অপরিহার্য তাঁরা আমাকে অখ্যাত করে জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। এটাও ভাল দিক। এতেও তো আমি পরিচিতি লাভ করলাম।”
শুভেন্দু অবশ্য এ সব নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “উনি (সৌমেনবাবু) অনেক কিছুই বলতে পারেন। তবে এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”