বাড়ির অমতে প্রাপ্তবয়ষ্কা মেয়ে বিয়ে করায়, মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে লোকজন নিয়ে হামলা, মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তরুণীর বাবার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের সাগরবাড় এলাকার গোবিন্দচক গ্রামের এই ঘটনায় পুলিশের কাছে শ্বশুর-সহ জনা আষ্টেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তরুণীর স্বামী। পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে। নিরাপত্তার কারণে ওই দম্পতি অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বলে খবর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলাঘাটের বৃন্দাবনচক এলাকার পরমানন্দপুর গ্রামের ওই তরুণী, মধুছন্দা এমএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তাঁর বাবা তাপস মাইতি পেশায় ফুল ব্যবসায়ী। কলকাতার মল্লিকঘাটে তাঁর ফুলের দোকান রয়েছে। স্থানীয়েদের দাবি, আর্থিক দিক থেকে অনেকটাই স্বচ্ছ্বল পরিবারের ওই তরুণীর সঙ্গে কয়েক কিলোমিটার দূরে কোলাঘাটের বরদাবাড় এলাকার গোবিন্দচক গ্রামের যুবক অমল মণ্ডলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পেশায় জ্যোতিষী ও আয়ুর্বেদের চিকিৎসক ওই যুবকের সঙ্গে মধুছন্দার সম্প্রতি রেজিস্ট্রি হয়।
অমলের বাবা পেশায় ব্যাগের ব্যবসায়ী কৃষ্ণপদ মণ্ডল জানান, মধুছন্দা গত বুধবার তাঁদের বাড়ি চলে আসে। রাতেই তাঁর সঙ্গে ছেলে অমলের বিয়ে দেয় তাঁর পরিবার। তা জানাজানি হতেই বৃহস্পতিবার রাতে ওই তরুণীর বাবা লোকজন নিয়ে তাঁদের বাড়ি চড়াও হন বলে অভিযোগ। কৃষ্ণপদবাবু বলেন, “রাত আটটা নাগাদ মধুছন্দার বাবা দলবল নিয়ে কয়েক’টি ট্যাক্সিতে বাড়িতে এসে মেয়ের খোঁজ করেন।” পরিস্থিতি আঁচ করে ওই তরুণী বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালায়। এ দিকে, ডাকাডাকির পরও বাড়ির কারও সাড়া না পেয়ে তাপস মাইতির লোকজন বাড়ির ভিতরে ঢুকে জিনিসপত্র তছনছ করে বলে অভিযোগ। তখন বাড়ির লোকজনকে মারধর করা হয় বলেও কৃষ্ণপদবাবুর দাবি। মারধরে আহত হন অমলের মা। স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়।
কোলাঘাটের সাগরবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান সুরজিৎ মাইতি বলেন, “বুধবার তাপস মাইতি আমার কাছে এসে বিয়ের ঘটনা জানিয়ে মেয়েকে ফেরৎ পাঠানোর বিষয়ে পরামর্শ চেয়েছিলেন। বলেছিলাম, ওরা প্রাপ্তবয়স্ক এ বিষয়ে কিছু করার নেই।” এ দিকে শ্বশুরবাড়িতে এসে বাবা এমন কাণ্ড ঘটানোয় লজ্জিত মধুছন্দা। ওই তরুণী শুক্রবার বলেন, “এই বিয়েতে বাবা-মায়ের আপত্তি ছিল। কিন্তু এ ভাবে হামলা চালানো হবে ভাবিনি।” একই কথা অমলেরও। তাঁরা চান শান্তিতে সংসার করতে।