ঘাটাল শহরে পুলিশের রুটমার্চ। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের বাকি এখনও প্রায় দেড় মাস। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে রাজি নয় নির্বাচন কমিশন। তাই ‘হাই-প্রোফাইল’ ঘাটাল ও মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র দু’টির স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর রুটমার্চ। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহর থেকে গঞ্জে পুলিশের টহল, গাড়ি ঘিরে তল্লাশি এমনকী সাদা পোশাকে নজরদারি-সবই চলছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “জেলার কমান্ডো বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনী, জেলা পুলিশের একাধিক টিম জেলার স্পর্শকাতর থানাগুলিতে রুটমার্চ ও তল্লাশি শুরু করেছে। চলছে সাদা পোশাকে নজরদারি, গাড়ি ঘিরে তল্লাশি।”
মাওবাদী প্রভাবিত ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্র এলাকায় এমনিতেই যৌথবাহিনীর কড়া নজরদারি রয়েছে। তাই ঝাড়গ্রামকে নিয়ে বিশেষ চিন্তিত নয় পুলিশ-প্রশাসন। তাছাড়াও ঝাড়গ্রামে লড়াইয়ের ময়দানে গ্ল্যামার দুনিয়ার কেউ নেই। ফলে ঝাড়গ্রামের ক্ষেত্রে পুলিশকে বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ঘাটালে দেব এবং মেদিনীপুরে সন্ধ্যা রায়ের মতো জনপ্রিয় প্রার্থীরা রয়েছেন।ওই দু’টি কেন্দ্রে সুষ্ঠ ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। এখন থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।”
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১২ মার্চ থেকে জেলার ডেবরা, সবং, পিংলা, ঘাটাল, দাসপুর, কেশপুর, চন্দ্রকোনা প্রভৃতি থানা গুলিতে রুটমার্চ ও টহল শুরু হয়েছে। কোথাও স্ট্র্যাকো আবার কোথাও সশস্ত্রবাহিনী। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্থানীয় থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এই রুটমার্চ চলছে। এমনিতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি গ্রামে গ্রামে প্রচার চালাচ্ছে। পাড়া বৈঠকও চলছে। তার সঙ্গে পুলিশের টহল চলায় ভোটের স্বাদ পেতে শুরু করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। ভোটের সময় মাঝে মধ্যেই রাজনৈতিক অশান্তি হওয়ার একটা আশঙ্কা থাকে। পুলিশি টহলের ফলে তাই কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন বাসিন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাসক দলের এক নেতার কথায়, “পুলিশের নজরদারির জন্য আমরা এলাকার কর্মীদের গণ্ডগোল যাতে না হয়-তার জন্য কড়া বার্তা দিয়েছি। কোনও দলের নেতৃত্বরা এলাকায় প্রচারে গেলে যেন বাধা না দেওয়া হয়, সেই কথাটাও
বলা হয়েছে।”
এ ছাড়াও এলাকার গেস্ট হাউস, লজে বোর্ডারদের পরিচয়পত্র না দেখাতে পারলে থানায় খবর দেওয়া এবং খাতা ঠিকঠাক রাখার কথা পুলিশ জানিয়েছে। সঙ্গে বোর্ডারদের মোবাইল নম্বরও নিতে বলা হয়েছে।