ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে উত্তপ্ত হল হলদিয়া।
বুধবার সকালে হলদিয়া শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনবিষ্ণুপুরে তৃণমূলের ওয়ার্ড কমিটির কার্যালয়ের দরজায় ও দলীয় পতাকায় আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, দলের ওই ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ভানুলাল দাসের বাড়ির খড়ের গাদায় আগুন লাগানো হয়। এই ঘটনায় ভানুলালবাবু স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলার তথা সিপিএমের চকদ্বীপা লোকাল কমিটির সদস্য মানস ভঁুইয়া-সহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তৃণমূলের হলদিয়া শহর যুব সভাপতি আজিজুল রহমান বলেন, “লোকসভা ভোটে ওই ওয়ার্ডে সিপিএমের ভোটের সংখ্যায় ধস নেমেছে। সেই আক্রোশে অভিযুক্তরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।” অন্য দিকে, সিপিএমের হলদিয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক সুদর্শন মান্না বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই এই ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেই অস্বস্তি ঢাকতে পরিকল্পিতভাবে সিপিএম কাউন্সিলার-সহ চারজনের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।” তাঁর দাবি, এর আগে তৃণমূল ওই কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে কয়েকটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করায় তিনি তাঁর কর্মক্ষেত্র ও দলীয় কার্যালয়েও যেতে পারেন না। তৃণমূলের হুমকি ও বাধা অগ্রাহ্য করে ওই ওয়ার্ডে বামেরা ভোট দেওয়ায় আক্রোশবশত মানসবাবুকে এলাকা ছাড়া করতে ফের মিথ্যা অভিযোগের আশ্রয় নিল তৃণমূল। কিন্তু অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
মহিষাদল ব্লকের কাঞ্চনপুর গ্রামে তৃণমূল সমর্থকদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তৃণমূলকে ভোট দেওয়ায় তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতি শেখ সাজাহানের ছেলে ও তৃণমূল কর্মী শেখ মুস্তাফার ছেলেকে মারধর করে সিপিএম কর্মী শেখ জুল্লাল রহমান, শেখ তারা-সহ কয়েকজন। মঙ্গলবার দুপুরের ওই ঘটনায় আহতদের মহিষাদল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ঘটনায় সিপিএমের ১৩জনের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল।
মহিষাদল ব্লকেরই জগতপুর গ্রামে তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের সাত জন আহত হন। অভিযোগ, তৃণমূলকে ভোট দেওয়ায় তাদের সিপিএমের লোকেরা মারধর করে। ওই ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে সিপিএমের দশ জনের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তৃণমূলের ব্লক নেতা তিলক চক্রবর্তীর অভিযোগ, “সিপিএমের নিষেধ ও হুমকি উপেক্ষা করে ওঁরা ভোট দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাদের মারধর করা হয়েছে।” সিপিএমের মহিষাদল জোনাল কমিটির সম্পাদক শরত্চন্দ্র কুইলা বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই কাঞ্চনপুর ও জগতপুরের ঘটনা দু’টি ঘটেছে। তা চাপা দিতে ও এলাকার সক্রিয় সিপিএম নেতাদের এলাকা ছাড়া করতেই তৃণমূল এই মিথ্যা অভিযোগ করছে।”